বিশ্বের ডানপন্থী রাজনৈতিক নেতাদের গুণগান গাইতে দেখা গেল ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনিকে। গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রে কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে (সিপিএসি) ভার্চ্যুয়ালি ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প, নরেন্দ্র মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন তিনি। এ সময় বিশ্বের বামপন্থী নেতাদের ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’ নিয়ে কটাক্ষ করলেন মেলোনি।
মেলোনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে যখন বিল ক্লিনটন ও টনি ব্লেয়ার গ্লোবাল বামপন্থী লিবারেল নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিলেন, তাঁদের রাষ্ট্রনায়ক বলা হয়েছিল। আজ যখন ট্রাম্প, মেলোনি, মিল্লে বা মোদী কথা বলেন, তাঁদের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবে অভিহিত করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের মানুষ আর তাদের (বামপন্থী) মিথ্যা কথায় বিশ্বাস করে না। বামপন্থীরা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে থাকে তবে আমরা এতে অভ্যস্ত। আর ভালো খবর হল, মানুষ আর তাদের মিথ্যাগুলোতে বিশ্বাস করে না।’
মেলোনি বলেন, ‘তাঁরা আমাদের দিকে এত কাদা ছোড়াছুড়ি করা সত্ত্বেও নাগরিকেরা আমাদের ভোট দিচ্ছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে একজন দৃঢ়চেতা নেতা হিসেবে অভিহিত করেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের জয়ে বামপন্থীরা নার্ভাস হয়ে পড়েছে। কারণ কনজারভেটিভরা এখন বিশ্বজুড়ে একত্রিত হয়ে কাজ করছেন।’
মেলোনির মতে, রক্ষণশীলরা ‘ওকিজম’ (অতিরিক্ত রাজনৈতিক শুদ্ধতা) এবং ‘বুক’-এর (যে আন্দোলন বা ধারণা সাধারণ সমাজের নৈতিকতার সঙ্গে সংঘর্ষে আসে) বিরুদ্ধে লড়াই করছে, দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করছে এবং তাদের দেশগুলোর প্রতি ভালোবাসা অনুভব করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতা রক্ষা করি। আমরা আমাদের জাতিগুলোকে ভালোবাসি। আমরা নিরাপদ সীমান্ত চাই। আমরা ব্যবসা এবং নাগরিকদের রক্ষা করি। আমরা পরিবার এবং জীবন রক্ষা করি। আমরা ওকিজমের বিরুদ্ধে লড়াই করি। আমরা আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং বাক স্বাধীনতা রক্ষা করি। এবং আমরা সাধারণ বোধের পক্ষে দাঁড়াই। শেষমেশ, আমাদের সংগ্রাম কঠিন, তবে সিদ্ধান্তটি স্পষ্ট।’
ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলোনিই ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র সরকার প্রধান, যিনি গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী মেলোনি দাবি করেন, ট্রান্সআটলান্টিক অংশীদারত্ব অটুট রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ ট্রাম্পের অধীনে ঘনিষ্ঠ থাকবে।
রাশিয়ার প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কূটনৈতিক মনোভাব এবং ইউরোপে, বিশেষ করে ন্যাটো সম্পর্কিত তাঁর নীতির পরিবর্তনের বিষয়ে উদ্বেগের মধ্যে মেলোনির এই পক্ষপাতী অবস্থান ইউরোপকে কিছুটা দ্বন্দ্বের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।