Ajker Patrika

জেলেনস্কির শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ১৯

অনলাইন ডেস্ক
রুশ হামলায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনের গাড়ি। ছবি: সিএনএন
রুশ হামলায় বিধ্বস্ত ইউক্রেনের গাড়ি। ছবি: সিএনএন

যুদ্ধবিরতি নিয়ে তোড়জোড়ের মধ্যে আবারও ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলা চালাল রাশিয়া। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির শহর ক্রিভি রিহতে চালানো হয়েছে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। এ হামলায় ৯ শিশুসহ ১৯ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে আরও অন্তত ৭২ জন। আহতদের মধ্যেও রয়েছে এক নবজাতক।

আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, রুশ হামলায় শহরটির ৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার পরপরই মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জেলেনস্কি। এটিকে ট্র্যাজেডি বলে অভিহিত করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। রাশিয়াকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আবারও ইউক্রেনকে রক্তাক্ত করল রাশিয়ার সন্ত্রাসীরা। আবাসিক এলাকা ও খেলার মাঠগুলোকে লক্ষ্য করে রকেট ও শাহেদ ড্রোন ছোড়া হয়েছে।’ এ সময় হতাহতদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানান তিনি। বলেন, ‘অনেকেই আহত হয়েছেন, অনেকে স্বজন হারিয়েছেন। এটি খুবই দুঃখজনক।’

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলছে, ক্লাস্টার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। একই দিন খেরসনেও একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। এসব হামলাকে কাকতালীয় বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা মানতে নারাজ ইউক্রেন।

জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ইউক্রেনের বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জ্বালানি সুবিধার মতো স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাবে না। কিন্তু তারা তা করে যাচ্ছে। এটি কোনোভাবেই কাকতালীয় হামলা হতে পারে না।’

এ ইস্যুতে ইউক্রেনে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ‘একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র একটি খেলার মাঠ ও রেস্তোরাঁর পাশে আঘাত হেনেছে, যা দেখে আমরা বিস্মিত। নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশুও রয়েছে। এ কারণেই যুদ্ধ বন্ধ হতেই হবে।’

রাষ্ট্রদূতের এই পোস্টের পর আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে এই প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত দুর্বল বলে মনে করছেন তিনি। জেলেনস্কি বলেন, ‘মার্কিন দূতাবাসের প্রতিক্রিয়া আশঙ্কাজনকভাবে দুর্বল। এমনকি রাশিয়ার নামটা পর্যন্ত উচ্চারণ করতে যেন তিনি ভয় পেয়েছেন। পোস্টে কোথাও রাশিয়ার নামই লিখেননি তিনি।’ পরে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়াই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে শিশুদের হত্যা করেছে। তাদের নাম চেপে যাওয়া নিঃসন্দেহে ভুল এবং বিপজ্জনক। এতে মস্কোর নরপিশাচরা কূটনৈতিক তৎপরতা উপেক্ষা করে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে উৎসাহিত হবে শুধু।’

তবে, রাশিয়ার এই হামলার নিন্দা করতে ছাড়ছেন না ইউরোপীয় নেতারা। ইউক্রেনে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত মার্টিন হ্যারিস এক্স-এ লিখেছেন, ‘ইউক্রেন যখন শান্তির জন্য চেষ্টা করছে, তখন রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অনেক দূরের বেসামরিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। ক্রিভি রিহতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রমাণ করে, তারা যুদ্ধ থামাতে চায় না।’ জার্মান রাষ্ট্রদূত মার্টিন জ্যাগার লিখেছেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াই আগ্রাসনকারী’।

এদিকে, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইউরোপীয় ও পশ্চিমা কর্মকর্তাদের আসন্ন একটি বৈঠকের স্থানকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। তাদের দাবি— এই হামলায় নিহত হয়েছে ইউক্রেনের অন্তত ৮৫ সেনা ও কয়েকজন বিদেশি কর্মকর্তা। বিধ্বস্ত হয়েছে কমপক্ষে ২০টি যানবাহন।

এর আগেও বেশ কয়েকবার জেলেনস্কির শহরে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত