ভারতে এক বিচারপতির সরকারি বাসভবন থেকে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত নগদ অর্থ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এরপর ওই বিচারপতিকে দিল্লি হাইকোর্ট থেকে এলাহাবাদে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল— কলেজিয়াম। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন কলেজিয়াম এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এনডিটিভির তথ্য মতে, কলেজিয়ামের পাঁচ সদস্য সর্বসম্মতিক্রমে বিচারপতি যশোবন্ত ভার্মাকে বদলির সিদ্ধান্ত নেন। তবে কিছু সদস্য মনে করছেন, শুধু বদলিই যথেষ্ট নয়; আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, যাতে বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না হয় এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা বজায় থাকে।
এ কারণে বিচারপতি ভার্মাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়ার কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে। যদি তিনি পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেন, তাহলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত সংসদের মাধ্যমে তাঁকে অপসারণের প্রথম ধাপ হিসেবে কাজ করবে।
এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি বিচারপতি যশোবন্ত ভার্মা।
গত সপ্তাহে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দোল উৎসবের ছুটিতে যশোবন্ত ভার্মার বাসভবনে আগুন লাগে। সেসময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর পরিবার ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। আগুন নেভাতে গিয়ে বিচারপতির বাড়িতে বিপুল পরিমাণে নগদ অর্থ পান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পরে তাঁরা পুলিশকে জানান।
সুপ্রিম কোর্টের ১৯৯৯ সালের নির্দেশিকায় বিচারপতিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং বিচারিক অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত ও মোকাবিলার পদ্ধতি উল্লেখ আছে। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে প্রথমে প্রধান বিচারপতি তাঁর কাছে ব্যাখ্যা চাইবেন। যদি প্রধান বিচারপতি অভিযুক্তের জবাবে সন্তুষ্ট না হন কিংবা বিষয়টি অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন হয়, তাহলে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
এই কমিটিতে একজন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এবং দুটি উচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি থাকবেন। তদন্তের পর কমিটি একটি প্রতিবেদন দেবে। যদি প্রধান বিচারপতি মনে করেন, অভিযুক্ত বিচারপতির আচরণ গুরুতর অপরাধের পর্যায়ে পড়ে, তবে তিনি তাঁকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিতে পারেন।
যদি অভিযুক্ত বিচারপতি পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেন, তাহলে প্রধান বিচারপতি সরকারের কাছে চিঠি পাঠিয়ে সংসদীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাঁকে অপসারণের প্রস্তাব দিতে পারেন। এটি ভারতীয় সংবিধানের ১২৪ (৪) অনুচ্ছেদের আওতায় পড়ে।