Ajker Patrika

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছাড়া সুস্থ ও সভ্য সমাজ সম্ভব নয়: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

অনলাইন ডেস্ক
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: সংগৃহীত

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা একটি সুস্থ ও সভ্য সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। গুজরাটে কংগ্রেস এমপি ইমরান প্রতাপগড়ির বিরুদ্ধে একটি এফআইআর খারিজ করে দিয়ে এই মন্তব্য করেছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। আজ শুক্রবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে একটি কবিতা আপলোড করার অভিযোগে ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেসের এমপি ইমরান প্রতাপগড়ির বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ ছড়ানোর’ অভিযোগে এফআইআর করেছিল গুজরাট পুলিশ। এ বিষয়ে কড়া মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, ‘যাদের চিন্তাধারায় সমস্যা আছে তাদের মানদণ্ডে বিচার করে কোনো লেখা বা মন্তব্যকে “বিদ্বেষমূলক” অভিহিত করা যাবে না। কিছু মানুষ সবকিছুকেই হুমকি বলে মনে করে।’

চলতি বছর শুরুর দিকে কংগ্রেস নেতা ইমরান প্রতাপগড়ি সামাজিক মাধ্যমে একটি কবিতা শেয়ার করেন, ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজে— ‘এ খুন পিয়াসো বাত সুনো (হে রক্তপিপাসু কথাটি শোনো)’ গান। বিজেপিকে ইঙ্গিত করেই তিনি এই গান বাজিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

পুলিশের মামলার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করলে গত ১৭ জানুয়ারি গুজরাট হাইকোর্ট এফআইআর খারিজ করতে অস্বীকার করেন।

বিচারপতি এএস ওকা ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ‘সুষ্ঠু গণতন্ত্রের জন্য মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অপরিহার্য। সাহিত্য, কবিতা, নাটক, শিল্পকলা ও ব্যঙ্গচিত্র সমাজকে সমৃদ্ধ করে। চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছাড়া সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে প্রদত্ত মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন অসম্ভব।’

আদেশে এফআইআর খারিজ না করার জন্য গুজরাট হাইকোর্টেরও সমালোচনা করা হয়েছে। গুজরাট হাইকোর্টের এমন অবস্থানের নিন্দা করে আদালত ও পুলিশের সাধারণের মানুষের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার যে দায়িত্ব তা স্মরণ করিয়ে দেন বিচারপতি এএস ওকা ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট আরও বলে, কবিতাটি ধর্মবিরোধী বা দেশবিরোধী নয় এবং পুলিশের উচিত, সংবেদনশীলতা প্রদর্শন করা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ বোঝা।

এই রায় এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ভারতজুড়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান কুণাল কামরার বিরুদ্ধেও মানহানির মামলা করা হয়েছে। মুম্বাইয়ের খার এলাকায় ‘দ্য আনকন্টিনেন্টাল মুম্বাই’ নামের একটি হোটেলে ‘নয়া ভারত’ শীর্ষক স্ট্যান্ডআপ কমেডি অনুষ্ঠানে ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ব্যঙ্গ করেন কুণাল কামরা। কৌতুকে শিবসেনার একাংশের নেতা একনাথ শিন্দেকে ইঙ্গিত করে ‘গাদ্দার’ বা বিশ্বাসঘাতক বলেন কুণাল। এররই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর তো করেছেই শিন্দে সমর্থকেরা, প্রকাশ্যে পিটিয়ে মারার হুমকিও দিয়েছে কেউ কেউ।

এমন পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে এক গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করল বলে মনে করছেন অনেকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রায় ভবিষ্যতে বাক্‌স্বাধীনতার ওপর আইনি বাধা কমানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জয়পুরে সম্প্রীতির নজির, ঈদগাহে আসা মুসলিমদের ওপর ফুল ছিটালেন হিন্দুরা

বাসা ভাড়ার টাকা নেই, অফিসের টয়লেটেই থাকছেন চীনা তরুণী

ঈদের মোনাজাতে খালেদা জিয়ার নাম না বলায় ইমামকে হেনস্তা, চাকরিচ্যুতির হুমকি

ঈদগাহে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান: আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ৫

কোম্পানি দেউলিয়া, দেড় কোটি মানুষের ডিএনএ ডেটার এখন কী হবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত