ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানোর দাবি করেছে ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি। গতকাল মঙ্গলবার হুতি মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি জানিয়েছেন, তাঁরা ইসরায়েলের একটি সামরিক ঘাঁটিতে এই হামলা চালিয়েছেন। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা ইরনার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এক বিবৃতিতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি বলেছেন, ‘তেল আবিবের উত্তরাঞ্চলে অধিকৃত জাফা অঞ্চলে অবস্থিত একটি ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটিতে ‘প্যালেস্টাইন-২’ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।’
হুতি মুখপাত্র আরও বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। ইসরায়েল ও আমেরিকার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা উভয়কেই ফাঁকি দিয়েছে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র।’ তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিন ও লেবাননের প্রতিরোধের সমর্থনে এই অপারেশন প্রতিশ্রুত বিজয় ও পবিত্র জিহাদের পঞ্চম পর্যায়ের অংশ।’
ইয়েমেনি সশস্ত্র গোষ্ঠী গাজায় ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ড শুরু হওয়ার পরপরই গত বছরের নভেম্বর থেকে ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলের গভীরে বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে। এ ছাড়া, এই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে হুতিরা তখন থেকেই লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে তাদের উপকূলে ইসরায়েল এবং এর মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোতে আক্রমণ করে আসছে।
এর আগে, গত ১৬ অক্টোবর হুতি বাহিনীর অস্ত্রাগার লক্ষ্য করে সিরিজ বোমা হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলায় ইরান সমর্থিত হুতি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো অত্যাধুনিক বি-টু স্টেলথ বম্বার বিমান ব্যবহার করে মার্কিন বাহিনী।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ দাবি করে, সর্বশেষ মিশনে তারা মাটির অনেক গভীরে থাকা হুতিদের অন্তত পাঁচটি অস্ত্রাগারে আঘাত করেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের মতে, লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগর দিয়ে চলাচল করা বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজগুলোকে হুমকি দেওয়ার জন্য উন্নতমানের অস্ত্র ওই অস্ত্রাগারগুলোতেই লুকিয়ে রাখত হুতিরা।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইয়েমেন থেকে পরিচালিত হুতিরা বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক বাণিজ্যপথকে অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এই গোষ্ঠী ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের পাশাপাশি লোহিত ও এডেন উপসাগরে বাণিজ্যিক ও সামরিক জাহাজগুলো লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানোরও দায় স্বীকার করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে অন্যতম বড় হুমকি হয়ে ওঠা এই গোষ্ঠীকে নিরস্ত্র করে দিতে তাই সেরা অস্ত্রটিই ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।