পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে গত মাসে চীনা কর্মীদের বহনকারী একটি বাসে প্রাণঘাতী বোমা হামলার ঘটনায় ভারত ও আফগানিস্তানকে দায়ী করেছে ইসলামাবাদ। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি।
গত মাসে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ওই প্রাণঘাতী হামলায় ১০ জন চীনা নাগরিক ও ৩ পাকিস্তানিসহ মোট ১৩ জন নিহত হয়েছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কোরেশি বলেন, বাসে ওই হামলায় ভূমিকা রেখেছে পাকিস্তানি তালেবান এবং ভারতীয় ও আফগান তদন্ত সংস্থাগুলো।
সংবাদ সম্মেলনে কোরেশি আরও বলেন, ১০০ থেকে ১২০ কেজি বিস্ফোরক ছিল ওই বাসটিতে। বিস্ফোরক-বোঝাই ওই বাসের চালকই এই হামলা চালিয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে আঙুলের একটি ছাপ এবং একটি আঙুলসহ দেহের অন্যান্য ছিন্ন অংশ উদ্ধার করেছি।
রয়টার্সের কাছে পাঠানো একটি ভিডিওতে পাকিস্তানি তালেবানের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তদন্তে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী-এই হামলার পরিকল্পনা থেকে শুরু করে হামলা পরিচালনা করা পর্যন্ত, সকল কাজেই আফগানিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করা হয়েছে। আর এতেই পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং আফগান গোয়েন্দা সংস্থা এনডিএস এই হামলার দিক নির্দেশনা দিয়েছে।
ভারত এবং পাকিস্তানে কোনো হামলা হলেই একে অপরকে দোষারোপ করে দুটি দেশ।
গত ১৪ জুলাই সকালে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কোহিস্তান জেলায় যাত্রীবাহী বাস দাসু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে যাওয়ার পথে গিরিখাদে পড়ে যায়। খাদে পড়ার আগে বাসটিতে বিস্ফোরণ হয়। এতে ১০ চীনা নাগরিকসহ ১৩ জন নিহত হয়েছিলেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরও ২৮ জন। নিহত ওই চীনা ব্যক্তিরা দাসু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করতেন।
চীনের অর্থায়নে পাকিস্তানে চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর (সিপিইসি) নামে যে ৬৫০ কোটি ডলারের বিশাল প্রকল্পের কাজ চলছে, তারই একটি অংশ দাসু জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন। চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকায় বলা হয়েছে, সম্প্রতি সময়ে চীনা নাগরিকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা ছিল এটি।