Ajker Patrika

পাকিস্তানে ট্রেন জিম্মি: ৩০ ঘণ্টার অভিযানে নাটকীয়তার অবসান

অনলাইন ডেস্ক
পাকিস্তানে আক্রমণের শিকার জাফর এক্সপ্রেস। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানে আক্রমণের শিকার জাফর এক্সপ্রেস। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের বোলান জেলায় ৩০ ঘণ্টা অভিযান শেষে জিম্মি হওয়া ট্রেন উদ্ধার করা হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা যাত্রীদের উদ্ধার করেছে। এই অভিযানে নিহত হয়েছে অন্তত ৩০ বিদ্রোহী। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন ও জিও নিউজের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গতকাল বুধবার রাতে জানিয়েছে, বেলুচিস্তানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে জিম্মি হওয়া ট্রেনযাত্রীদের উদ্ধারে পরিচালিত ৩০ ঘণ্টার অভিযান সমাপ্ত হয়েছে। তারা নিশ্চিত করেছে, এ ঘটনায় ২১ বেসামরিক ব্যক্তি ও নিরাপত্তা বাহিনীর ৪ সদস্য নিহত হয়েছেন। এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী আত্মঘাতী বোমাবাজসহ মোট ৩৩ জন বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে।

জাফর এক্সপ্রেস নামের ওই ট্রেনটির ৯টি বগিতে ৪৪০ জন যাত্রী ছিল। বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটা থেকে পেশোয়ার যাওয়ার পথে গত মঙ্গলবার বোলান জেলার গুদালার ও পিরু কুনরির পাহাড়ি এলাকায় এক টানেলের কাছে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির (বিএলএ) সদস্যরা বিস্ফোরক ব্যবহার করে ট্রেনটিকে লাইনচ্যুত করে এবং জিম্মি করে। ঘটনাস্থলটি কোয়েটা থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলো নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করেছে যে, হামলাটি আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত হয়েছে এবং সেখানে থাকা সন্ত্রাসী নেতারা ঘটনার পুরো সময় বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখেছিল।’ এতে আরও বলা হয়, ‘পাকিস্তান আশা করে যে, আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী সরকার তাদের দায়িত্ব পালন করবে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর জন্য তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না।’

এর আগে, বুধবার সন্ধ্যায় বিএলএ দাবি করেছিল, তারা ৫০ যাত্রীকে হত্যা করেছে। তার আগে মঙ্গলবার সংগঠনটি জানিয়েছিল, তারা ২১৪ জনকে জিম্মি করেছে, যাদের বেশির ভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।

বিএলএ বেলুচিস্তানের সবচেয়ে শক্তিশালী বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং এই গোষ্ঠীটি ইরান ও আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সক্রিয়। গোষ্ঠীটি হুমকি দিয়েছিল যে, যদি কর্তৃপক্ষ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বেলুচ রাজনৈতিক বন্দী, কর্মী এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের মুক্তি না দেয় তবে তারা জিম্মিদের হত্যা করা শুরু করবে। গোষ্ঠীটি দাবি করে, এসব বন্দীরা সেনাবাহিনীর হাতে অপহৃত হয়েছে।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমাদ শরীফ জানিয়েছেন, বিদ্রোহীরা যাত্রীদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছিল বিধায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান শেষ হতে দেরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘উদ্ধার অভিযান ধাপে ধাপে পরিচালিত হয়েছে এবং সন্ধ্যায় চূড়ান্ত অভিযান শেষে বাকি সব জিম্মিকে নিরাপদে মুক্ত করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, প্রথমে স্নাইপাররা আত্মঘাতী হামলাকারীদের হত্যা করে, এরপর একে একে ট্রেনের প্রতিটি বগি থেকে বিদ্রোহীদের নিকেশ করা হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই অভিযান চলাকালে কোনো যাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত