ভারত বিগত কয়েক মাস বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে প্রোপাগান্ডা ক্যাম্পেইন চালিয়েছে, বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা তারই ফল। এ ঘটনায় কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে; ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে তার জবাব চাইতে হবে।
আজ শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এই দাবি জানান।
বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারকে উৎখাতের পর থেকে অভ্যুত্থানকে ভারত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে, ঘৃণা উৎপাদন করেছে; আমরা তার ফল প্রত্যক্ষ করছি।’
আরিফ সোহেল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি জনগণতান্ত্রিক অভ্যুত্থান হয়েছে। আমাদের বোনকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ভারতকে পদক্ষেপ নিতে হবে। কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তারা, ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে তার জবাব চাইতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য তারেকুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই তারা (ভারত) বাংলাদেশের জনগণকে দ্বিতীয় সারির নাগরিক মনে করে সীমান্তে প্রতিবছর শত শত মানুষ হত্যা করেছে। গত সরকারের আমলে বিচার করা তো দূরের কথা, বিচার চাওয়াও হয়নি। ২০২৪ সালের অভ্যুত্থান ছিল ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে নতুন মুক্তিযুদ্ধ। এখানে আবু সাঈদ থেকে শুরু করে যাঁরা শহীদ হয়েছেন; আবরার ফাহাদ, ফেলানীর সিলসিলা ধরে তাঁরা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। অন্য কোনো দেশের আধিপত্যবাদ বাংলাদেশের মানুষ মেনে নেবে না।’
সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম বলেন, ‘ভারতে যখন মৌমিতাকে নির্মমভাবে ধর্ষণ করা হয়েছিল, তখন আমরা প্রতিবাদ জারি রেখেছিলাম। কিন্তু যখন নাজমাকে হত্যা করা হলো, তখন ভারতীয় জনগণ চুপ কেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে এখনো কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। আমরা বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনতা নাজমা হত্যার বিচার চাই; বাংলাদেশের মানুষ আর সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে একটুও ছাড় দেবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সেল সম্পাদক জাহিদ আহসানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জুলাই অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেলের সদস্য সালোয়া আক্তার, তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী নিরব হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পল্লবী থানার আহ্বায়ক জামিল তাজ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ভারতের বেঙ্গালুরুতে এক বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার সকালে রামমূর্তি নগরের কেলকেরে লেকের কাছে ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিন সন্তান নিয়ে উত্তর বেঙ্গালুরুতে থাকতেন তিনি। ওই নারী একটি অ্যাপার্টমেন্টে গৃহকর্মীর কাজ করতেন, তাঁর স্বামীও একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী।