জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য ও রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মো. মনসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) মামলার বিষয়গুলো নিশ্চিত করেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।
আক্তার হোসেন বলেন, স্বপন ভট্টাচার্য অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ স্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসংগতিপূর্ণ ২ কোটি ৪৮ লাখ ৭১ হাজার ১৫১ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি স্বপন ভট্টাচার্য নিজ নামে ১৯টি ব্যাংক হিসাবে মোট জমার পরিমাণ ৪১ কোটি ৬৪ লাখ ৮২ হাজার ৩৩৪ টাকা। এসব হিসাব থেকে তার মোট উত্তোলনের পরিমাণ ৪০ কোটি ৩১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৯৪ টাকা।
এই অস্বাভাবিক লেনদেন করে আসামি মানিলন্ডারিং-এর সম্পৃক্ত অপরাধ ‘দুর্নীতি ও ঘুষ’ সংঘটনের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে উহার রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করেছেন বলে এজাহারে বলা হয়।
অন্যদিকে তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯১ টাকার সম্পদ অর্জন ও নিজ নামে ১০টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮৩ টাকা জমা ও মোট ৭ কোটি ৫০ লাখ ৭৭ হাজার ৬৪৯ টাকা উত্তোলন করেছেন।
দুদকের তথ্য অনুসারে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করার অভিযোগ আনা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ ছাড়া মামলার রাজশাহী ৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মো. মনসুর রহমানের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৬০ লাখ ৩৪ হাজার ৪৯২ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ মামলা করা হয়েছ।
এ ছাড়া তার নামীয় ৩টি ব্যাংক হিসাবে মোট ২৭টি জমা ভাউচারের মাধ্যমে তার জাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ১০ লাখ বা ততোধিক টাকা করে মোট ৬ কোটি ১০ লাখ টাকা জমা ও পরবর্তীতে উত্তোলনপূর্বক স্থানান্তর ও হস্তান্তর করেন।
এসব অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও ৪ (৩) ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।