প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের বিরোধিতা করলে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু সহিংস পন্থায় নির্বাচনের বিরোধিতা করা হলে বা ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগে বাধা দেওয়া হলে অবশ্যই সংকট দেখা দেবে। আজ সোমবার আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের একটা অংশ নির্বাচন বর্জন করেছে জানিয়ে সিইসি বলেন, তারা শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের বিরুদ্ধে, নির্বাচনের বিপক্ষে বক্তব্য রাখছে। সেটা অসুবিধা নেই, তারা জনমত সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সহিংস পন্থায় যদি বিরুদ্ধাচরণ করা হয় বা যাঁরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, তাঁদের বাধা প্রদান করা হয় তাহলে অবশ্যই সংকট দেখা দেবে।
এ সময় সিইসি এই সংকট মোকাবিলার প্রতি জোর দিয়ে বলেন, ‘সেই সংকট মোকাবিলা আমাদের করতে হবে। এই কারণে করতে হবে যে, নির্বাচন নির্ধারিত সময়ে করতে হয়। এখানে প্রতিহত করার চেষ্টা আসতে পারে, বিপত্তি আসতে পারে—তারপরও এই দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হবে।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘অনেকে বলেন ওনারা (নির্বাচন কমিশন) নির্বাচন তিন মাস পিছিয়ে দিলে ভালো হতো। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য হয়নি। নির্বাচন তিন মাস পিছিয়ে দেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের নেই। অনেকে মনে করেন, নির্বাচন কমিশন অসীম ক্ষমতার অধিকারী; প্রয়োজনে তিন মাস, তিন বছর বা ত্রিশ বছর পিছিয়ে দিতে পারে। এগুলো সত্য নয়। যাঁরা রাজনীতিবিদ তাঁরা অবশ্যই অবহিত যে, নির্ধারিত সময়েই সংসদ সদস্য নির্বাচন করতে হয়।’
সিইসি বলেন, ‘যখনই নির্বাচনের প্রশ্ন আসে, তখন অনেকেই এটাকে হালকা করে নেন। এটা হালকা করে নেওয়ার বিষয় না। আমাদের কাজ কিন্তু সরকার গঠন করা নয়, আমাদের কাজটা খুব সীমিত—নির্বাচন আয়োজন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করার ব্যবস্থা করা।’
একই দিনে ৪৩ হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, সর্বোচ্চ দায়িত্বটা কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন কখনোই তার একক শক্তিতে নির্বাচন আয়োজন করতে পারে না। এ কারণেই সংবিধানে আরপিওতে সুস্পষ্ট করে বলা আছে, নির্বাচন পরিচালনা করতে কমিশন যেভাবে চাইবে রাষ্ট্র বা সরকার তা দিতে বাধ্য।
এ সময় তিনি আরও বলেন, কিছুটা উত্তাপ নির্বাচন হবে, কিছুটা গন্ডগোল হতে পারে, সহিংসতা হতে পারে। এগুলো খুব বেশি ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। যেটা অসহনীয় সহিংসতা সেটা প্রতিরোধ করতে হবে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) ও বেগম রাশেদা সুলতানা বক্তব্য দেন।