Ajker Patrika

র‍্যাব-এনটিএমসি বিলুপ্ত ও ডিজিএফআইয়ের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করতে হবে: টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৫, ০৯: ৪৮
ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত
ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশকে একটি নজরদারিভিত্তিক রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে জানিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয় এমন নজরদারি থেকে আমাদের রাষ্ট্রকে সরে আসতে হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) আয়োজিত জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সহিংসতাবিষয়ক জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘নজরদারির ক্ষেত্রে জাতিসংঘ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে বিশেষ করে মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয় এমন নজরদারি থেকে আমাদের রাষ্ট্রকে সরে আসতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) বিলুপ্তির আহ্বান জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সহিংসতাবিষয়ক জাতিসংঘ প্রতিবেদনের দুটি প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত করার সুপারিশ করার কথা বলা হয়েছে, একটি হচ্ছে র‍্যাব, আরেকটি এনটিএমসি। এর সঙ্গে আরেকটি প্রস্তাব রয়েছে বাংলাদেশকে একটি নজরদারিভিত্তিক সমাজে পরিণত করা হয়েছে। সেটি বন্ধ করতে হবে।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন বলেন, ‘ডিজিএফআইয়ের ম্যান্ডেট হচ্ছে নিরাপত্তা-সংক্রান্ত গোয়েন্দা প্রতিষ্ঠান, এটা মানুষের অধিকার-সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনের জন্য নয়। এই ডিজিএফআইয়ের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করতে হবে। একইভাবে আনসার-ভিডিপির ওপর যে সামরিক কর্তৃত্ব, তা বন্ধ করতে হবে।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রতিবেদনে প্রস্তাব করা হয়েছে, সেনাবাহিনী, ডিজিএফআই, র‍্যাব, পুলিশ, আনসার ও বিজিবির যেসব সদস্যকে ২০২৪ সালের সহিংসতায় সম্পৃক্ত করা হয়েছিল, তাঁদের কোনো অবস্থাতেই যেন শান্তি মিশনে পাঠানো না হয়।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘আমাদের নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের স্বাধীন পরিবেশের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে।’

ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে পাঁচটি বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে ও ব্যাপক পরিসরে সংস্কার পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ। সেগুলো হলো জবাবদিহি ও বিচারব্যবস্থা, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী, নাগরিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ, রাজনৈতিক ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক সুশাসন ও দুর্নীতি দমন। জাতিসংঘের মতে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধ ও ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে সবার আগে এসব খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানিয়েছেন ইফতেখারুজ্জামান।

জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সহিংসতাবিষয়ক জাতিসংঘ প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নে একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করার দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সমন্বয়ক তামান্না হক রীতি, ব্লাস্টের পরিচালক মো. বরকত আলী, নারীপক্ষের সদস্য রওশন আরা ও নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত