বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধকে সব সময় ধারণ করে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধকে সব সময় ধারণ করে। আমাদের সংবিধানের ভূমিকাতে সেটা আমরা ঘোষণা দিয়ে বলেছি। ঐতিহাসিক স্বীকৃতি প্রদান করেছি।’
আজ বুধবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর অপ্রতিরোধ্য ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রা, জনপ্রিয়তা, গণজাগরণ প্রতিরোধ করতে সব সময় একটা শক্তি, একটা মহল, স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধকে জামায়াতে ইসলামীর বিপক্ষে দাঁড় করানোর একটা অপচেষ্টা করে থাকে। আওয়ামী লীগ এ কাজে সিদ্ধহস্ত। তারা বিদায় নিয়েছে। আওয়ামী লীগ ছাড়াও ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রামে আমরা যারা রাজপথে ছিলাম, সেই সংগ্রামী নেতাদের মধ্য থেকেও কিছু লোকের জামায়াত বিরোধিতার কথাগুলো, ভাষাগুলো আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ভাষার সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। কিন্তু তারা ভুলে যান- স্বৈরাচারবিরোধী, ফ্যাসিবাদবিরোধী, ভোটাধিকারের আন্দোলনে তাদের সঙ্গে থাকলে, তখন বলে আমাদের সঙ্গী। না থাকলে বলে এরা জঙ্গি। সঙ্গে থাকলে আমাদের সব গুনাহ মাফ। নাম বলতে চাই না, জনগণ তাদের চেনে।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কয়েকটি প্রশ্ন এখনো নিষ্পত্তি হয়নি জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘কয়েকটি প্রশ্নের নিষ্পত্তি হয়নি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনারা দেশের মানুষের ওপর হামলে পড়ল, গুলি চালাল। ২৬ মার্চ সকালে শেখ মুজিব কি গ্রেপ্তার হলো, নাকি আত্মসমর্পণ করল তা নিয়ে ইতিহাসের বিতর্ক এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। রেসকোর্স ময়দানে ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা আপনি (শেখ মুজিব) দিয়ে দিয়েছেন। ৭ মার্চের পর কেন পাকিস্তানিদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন। জাতির কাছে সেই ইতিহাস এখনো অপ্রকাশিত।’
গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘আপনি যদি দেশের স্বাধীনতাই চাইবেন, তাহলে আবার মিটিংয়ে বসলেন কেন। জাতি বুঝতে পেরেছে, আলোচনা সমঝোতা করে আপনি পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করেছেন। স্বাধীনতাই যদি চাইতেন, তাহলে পাকিস্তানি প্রেতাত্মা হায়েনাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতেন না। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো নেতা তার প্রতিপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করে ধরা দেয়নি। লাখ লাখ মানুষকে গুলির মুখে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়নি।’
আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে গণহত্যাকারীদের দৃশ্যমান বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন নিতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করেই নির্বাচন দিতে হবে। অন্যথায় পূর্বের মতো বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম প্রমুখ।