সাম্প্রতিক বছরগুলোতে থ্রিডি প্রিন্টিং যেকোনো কিছু উৎপাদনের ক্ষেত্রে অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। বিশ্বজুড়ে ক্রমেই উৎপাদনের জন্য থ্রিডি প্রিন্টারের ব্যবহার বাড়ছে। তবে এখনো অনেক জটিল শিল্পোৎপাদন যেমন, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে থ্রিডি প্রিন্টারের ব্যবহার সহজলভ্য হয়ে ওঠেনি বেশ কিছু জটিলতার কারণে। তবে থ্রিডি প্রিন্টারের সহায়তায় সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন সহজ করা যাবে এমন এক ধরনের মলিকুলার গ্লু আবিষ্কার করেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।
থ্রিডি প্রিন্টারে কোনো কিছু উৎপাদনের ক্ষেত্রে সেগুলোর গঠন ও স্থায়িত্ব নির্ভর করে যে পদার্থ দিয়ে কেই বস্তুটি গঠিত সেগুলোর বিভিন্ন স্তরের মধ্যকার কণিকার যে বন্ধন তার ওপর। মূলত এই বন্ধনই সংশ্লিষ্ট বস্তুর গাঠনিক কাঠামোর বৈশিষ্ট্য নির্ধারণ করে দেয়। তবে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের ক্ষেত্রে এই বিষয়টিই বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
সাধারণত সেমিকন্ডাক্টর প্রিন্টিংয়ের ক্ষেত্রে যেসব ন্যানোপার্টিকল একসঙ্গে যুক্ত করা হয় সেগুলোর ক্ষেত্রে পলিমার বন্ধনী ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এটি করতে গিয়ে যে সেমিকন্ডাক্টর উৎপন্ন হয় তার বৈশিষ্ট্য এবং গুণগত মান অনেকটাই কমে যায়। আর চীনা বিজ্ঞানীরা সেই বাঁধা কাটাতেই এমন এক মলিকুলার গ্লু আবিষ্কার করেছেন।
আবিষ্কারটি করেছেন চীনের সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এই গ্লু আবিষ্কার করেছেন। তাঁরা এরই মধ্যে থ্রিডি প্রিন্টারের টুলবক্সে সেই গ্লুর একটি জায়গা যুক্ত করেছেন। এমনকি তাঁরা পরীক্ষামূলকভাবে সেই প্রিন্টারের সহায়তায় একটি সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনও করেছেন। সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ঝ্যাং হাউ, অধ্যাপক লি জিংহং, লিন লিনান ও সান হুংবো এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। তাদের গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে পিয়ার রিভিউড জার্নাল সায়েন্সে।
গবেষকেরা বলছেন, এই আবিষ্কারটি বিশ্বের প্রথম। বিশেষ করে সেমিকন্ডাক্টরের ন্যানোপার্টিকলে এমন গ্লু-এর ব্যবহার থ্রিডি প্রিন্টারের সহায়তায় সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে নতুন পথ খুলে দেবে। নতুন এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন ‘থ্রিডি পিন’ হিসেবে।