হেলমেট খুলে দৌড়াচ্ছেন শশাঙ্ক সিং। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে মাঠে গত রাতে এমনই বাঁধভাঙা উদযাপন করতে দেখা গেছে তাঁকে। হবে না-ই বা কেন? পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে পাঞ্জাব কিংসের জয়ের নায়ক যে তিনি।
আহমেদাবাদে রুদ্ধশ্বাস জয়ের নায়ক শশাঙ্ককে নিয়েই ২০২৪ আইপিএল নিলামের সময় হয়েছে একপ্রস্থ নাটক। দুবাইয়ে গত বছরের নিলামে যখন শশাঙ্ককে তোলা হয়, তখন তাঁকে (শশাঙ্ক) কেনে পাঞ্জাব কিংস। পাঞ্জাবের সহসত্বাধিকারী প্রীতি জিনতা ধন্দে পড়ে যান এই ভেবে যে তাঁরা ভুল শশাঙ্ককে কিনেছেন কি না। কারণ শশাঙ্ক নামে আরও এক ক্রিকেটারের নাম তালিকায় ছিল। পাঞ্জাব ফ্র্যাঞ্চাইজির দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখে নিলাম পরিচালনাকারী মল্লিকা সাগর জিজ্ঞেস করেছিলেন যে শশাঙ্ককে কি তাঁরা (পাঞ্জাব কিংস কর্তৃপক্ষ) চাচ্ছেন না। তখন শশাঙ্ক একটু অপরিচিতই ছিলেন। আইপিএলে তাঁর অভিজ্ঞতা ছিল এক মৌসুম খেলার। ২০২২ আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদে খেলেন ১০ ম্যাচ। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতেও আহামরি কিছু ছিল না।
নিলামের সমস্যা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত পাঞ্জাবই দলে ভেড়ায় শশাঙ্ককে। পাঞ্জাবের জার্সিতে শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি তাঁর। মুল্লানপুরে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে মেরেছেন গোল্ডেন ডাক। মুল্লানপুরের পর বেঙ্গালুরুর চিন্নস্বামী স্টেডিয়াম, লক্ষ্ণৌর ভারতরত্ন অটল বিহারী বাজপেয়ি স্টেডিয়াম—দুই ভেন্যুতেই শশাঙ্ক অপরাজিত ছিলেন। যার মধ্যে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (আরসিবি) বিপক্ষে করেন ৮ বলে ২১ রান। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ৭ বলে করেন ৯ রান। তবে কোনোটিতেই জিততে পারেনি পাঞ্জাব। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে গত রাতে প্রথমে ব্যাটিং করে শুবমান গিল-রশিদ খানের মতো তারকাদের নিয়ে গড়া গুজরাট। ২০০ রানের লক্ষ্য যখন পাঞ্জাব তাড়া করতে নামে, শশাঙ্ক ব্যাটিংয়ে নামেন ৬ নম্বরে। ৬৮ বলে তখন তাদের দরকার ১৩০ রান। নিজেকে চেনানোর জন্য যে ভালো মঞ্চই পেলেন শশাঙ্ক। নিজের মুখোমুখি হওয়া প্রথম ৭ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় করেন ২১ রান। ১১তম ওভারের শেষ তিন বলে উমেশ যাদবকে ৪,৬ ও ৪ মারেন শশাঙ্ক।
এবারের আইপিএলে প্রথম তিন ম্যাচে আহামরি তেমন পারফর্ম করতে পারেননি শশাঙ্ক। তবু পাঞ্জাব ম্যানেজমেন্ট তাঁর (শশাঙ্ক) ওপর ভরসা রেখেছে ও তিনি চতুর্থ ম্যাচে খেলতে পেরেছেন। ব্যাটিং অর্ডার সাত থেকে ছয় নম্বরে উঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। শশাঙ্ক বলেন, ‘এর আগে তেমন কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে দুই মৌসুম আগে খেলেছি। তবে এখানের (পাঞ্জাব) ম্যানেজমেন্ট, কোচিং স্টাফ সবাই আমার পাশে থেকেছেন। বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলাম আমি।’