‘হামার এত ভালো ছৈলটা পুরুস্কার আনির যাই লাশ হই গেইল। হাসি-খুশি ছোয়ালটা হামার হারাই গেল রে। এই পুরস্কারের জন্যে ওঁয় (মাশরাফি) খাই, না খাই কত্তো কষ্ট কইল। এলা পুরস্কারগুলা ধরি ওর মায়ের কান্দোন কাঁয় থামাইবে রে।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন পদকজয়ী সাইক্লিস্ট মাশরাফি হোসেনের মারুফের বাবা।
ট্রেন থেকে পড়ে মারা যাওয়া দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার পদকজয়ী সাইক্লিস্ট মাশরাফি হোসেনের (মারুফ) আকস্মিক মৃত্যুতে তাঁর মা–বাবা ও এলাকাবাসীর কান্না থামছে না। এমন প্রাণোচ্ছল তরুণের মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা। আজ বুধবার ভোর থেকে মাশরাফির বড় বাউল গ্রামের বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকাসহ আশপাশের গ্রামবাসীরা।
ঢাকায় শেখ কামাল দ্বিতীয় যুব গেমসে সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় এবার প্রথমবারের মতো অংশ নিয়ে মাশরাফি তিনটি পদক জিতে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে গত মঙ্গলবার চিরিরবন্দর স্টেশনে ট্রেন থেকে পড়ে মারা যান তিনি।
আজ সকালে মাশরাফিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাবা আনিছুর রহমান বাড়ির বাইরে একটি চেয়ারে বিষণ্ন চেহারায় বসে আছেন। বাড়ির ভেতরে মা ছেলের কথা বলছেন আর পুরস্কারগুলো আঁকড়ে ধরে অঝোরে চোখের পানি ফেলছেন।
মাশরাফিদের বাড়িতে চারটি মাটির ঘর। তার একটিতে মারুফ থাকতেন। সেই ঘরের কাঠের আলমারিতে ভর্তি নানান পদক।
মাশরাফির বাবা বাড়ির কাছের একটি পোস্ট অফিসের পিয়ন পদে কর্মরত। তিন ভাইয়ের মধ্যে মাশরাফি দ্বিতীয়। ছোটবেলা থেকেই মাশরাফির পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি ছিল মনোযোগ। মাশরাফি দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটেসিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন।