নিজেদের দেওয়া কথা রাখল যুক্তরাষ্ট্র। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ খেলতে নামার আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সাহসী ক্রিকেট খেলার কথা জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র দলের সহ-অধিনায়ক অ্যারন জোন্স।
আজ ডালাসে কানাডার বিপক্ষে সাহসী ক্রিকেট খেলেই ৭ উইকেটের জয়ে বিশ্বকাপ শুরুও করেছে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। কানাডার দেওয়া ১৯৫ রানের লক্ষ্যটা সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে কোনোভাবেই কম ছিল না। তবে ঘরের মাঠের সঙ্গে নিজেদের সমর্থকদের সমর্থন পেয়ে যুক্তরাষ্ট্র কী দুর্দান্ত এক ম্যাচই না খেলল। জোন্সের বিধ্বংসী ইনিংসে ১৪ বল হাতে রেখেই লক্ষ্য পেরিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এতে নিজেদের তো অবশ্যই সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে বিশ্বকাপে রান তাড়ার রেকর্ড গড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। টি-টোয়েন্টিতে যুক্তরাষ্ট্রের আগের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড ছিল ১৬৯। আর বিশ্বকাপে সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে আগের সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়া করে জয় ছিল নেদারল্যান্ডসের। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের দেওয়া ১৯০ রানের বিপরীতে ১৯৩ করে ডাচরা।
অথচ শুরুটা ভালো ছিল না যুক্তরাষ্ট্রের। বড় লক্ষ্য তাড়া করার জন্য যখন উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ কিছু প্রয়োজন তখন উল্টো দলীয় রানের খাতা খোলার আগেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন ওপেনার স্টিভেন টেলর। আরেক ওপেনার এবং দলের অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেলও দলকে খুব বেশি দূর নিয়ে যেতে পারেননি। দলীয় ৪২ রানের মাথায় ১৬ রান করে ফেরেন তিনি।
দুই ওপেনারকে হারানোর পরেই অবশ্য খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন আন্দ্রিস গুস এবং জোন্স। প্রতিপক্ষকের বোলারদের উপর চড়াও হওয়ার শুরুটা করেন ছক্কা মেরে দলকে জয় এনে দেওয়া জোন্সই। গতকাল নিজের দেওয়া কথার প্রমাণ রাখতে মাঠে নেমেই ছক্কা বৃষ্টি শুরু করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে মাত্র ৫৮ বলে ১৩১ রানের জুটি গড়ে কানাডার মুখ থেকে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন দুজনে।
দুর্দান্ত এই জুটির ৭৬ রানই করেন জোন্স। সেটিও মাত্র ৩৩ বলে। তার আগে ২২ বলে ফিফটি করে রেকর্ড গড়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ৪০ বলে ৯৪ রান করে অপরাজিত থাকেন যুক্তরাষ্ট্রে সহ–অধিনায়ক। ৬ রানের আক্ষেপের ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১০ ছক্কার বিপরীতে ৪ চারে। দলের হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার মালিকও এখন তিনি। ম্যাচ জেতানো ইনিংসের জন্য পরে ম্যাচসেরার স্বীকৃতিও পেয়েছেন জোন্স।
গুস অবশ্য জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেননি। দলের জয়ের জন্য যখন ২২ রান প্রয়োজন ঠিক তখনই ৬৫ রান করে আউট হন তিনি। ৪৬ বলের ইনিংসটি ডাকাবুকো ব্যাটিংয়ের না হলেও ৭ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংসটি না খেললে এমন জয় নিয়ে হয়তো বিশ্বকাপটা শুরু করতে পারত না যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য ফিল্ডারদের অবদানও ছিল। বেশ কিছু ক্যাচ মিস করেছেন কানাডার ফিল্ডাররা।
এর আগে ডালাসে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ১৯৪ রান তোলে কানাডা। নবনীত ঢালিওয়াল (৬৫) ও নিকোলাস কার্টনের (৫১) ফিফটিতে কানাডা দুইশ ছুঁই ছুঁই রান করলেও এক জোন্সের বিধ্বংসী ইনিংসের কাছেই পরাজিত হতে হলো তাদের।