ধরুন, আপনার মোবাইল ফোনে কোনো পণ্য সম্পর্কে জানতে গুগল বা ফেসবুকে সার্চ করলেন। কাজটি হয়তো তখনই শেষ। কিন্তু এর পর থেকে নির্দিষ্ট পণ্যের বিভিন্ন বিজ্ঞাপন আপনার ফেসবুকে নিউজ ফিডে সারা দিন দেখা যাচ্ছে। ফেসবুকের এমন আচরণে কিন্তু অনেকে বিরক্ত। আর এই বিরক্তি থেকে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার বিরুদ্ধে মামলা করে দেন তানিয়া ওকারল নামের এক ব্রিটিশ নারী।
২০২২ সালে মেটার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন তানিয়া ওকারল। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ফেসবুক তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করে টার্গেটেড বিজ্ঞাপন দেখাচ্ছে। এটি তাঁকে অস্বস্তি এবং অসুবিধায় ফেলে।
তানিয়া ২০১৭ সালে জানতে পারেন, তিনি গর্ভবতী। তখনো তিনি কাউকে বিষয়টি জানাননি। কিন্তু তানিয়া লক্ষ করেন, ফেসবুক তাঁর ফিডে গর্ভাবস্থা, শিশুর ছবি এবং মাতা-পিতাবিষয়ক বিজ্ঞাপন দেখাতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতি তাঁর জন্য অত্যন্ত অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। তিনি বুঝতে পারেন, তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য কতটা ব্যবহার করা হচ্ছে।
তানিয়া ওকারল এই বিজ্ঞাপনব্যবস্থার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। আদালতে তিনি দাবি করেন, ফেসবুকের টার্গেটেড বিজ্ঞাপনব্যবস্থা যুক্তরাজ্যের মার্কেটিং আইনের আওতায় আসে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা তাঁদের তথ্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে পারেন।
মেটা দাবি করে, ফেসবুকে যে বিজ্ঞাপনগুলো দেখানো হয়, তা একক ব্যবহারকারীর জন্য নয়। ১০০ জনের বেশি মানুষের একটি গ্রুপকে লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপনগুলো দেওয়া হয়। তাই এটি সরাসরি মার্কেটিং হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। তবে ডেটা নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিও মেটার এই বক্তব্য মেনে নেয়নি।
আইসিওর এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রত্যেক ব্যবহারকারীর তথ্য ব্যবহারের বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
এর সঙ্গে সেখানে “না” বলার অধিকার থাকতে হবে।’ তানিয়া ওকারল আরও জানান, শেষ পর্যন্ত মেটা তাঁর তথ্য ব্যবহার করে টার্গেটেড বিজ্ঞাপন প্রদর্শন বন্ধ করার জন্য সম্মত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘ফেসবুক আমি ব্যবহার করব। কারণ, এটি আমার পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তবে আমি চাই না, আমার ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আমাকে এসব বিজ্ঞাপন দেখানো হোক।’
সূত্র: বিবিসি