কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দিয়ে তৈরি ছবি সব ডিজিটাল মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রযুক্তিটি উন্নয়নে আসল ও এআই ছবির পার্থক্য বোঝা বেশ কঠিন। গুগলের সার্চ ফলাফলে এআই দিয়ে তৈরি ছবির সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। ফলে আসল ছবি খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই এসব ছবি আরও ভালোভাবে শনাক্তে সার্চ ফিচারে নতুন সুবিধা আনছে গুগল।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে গুগল ‘অ্যাবাউট দিস ইমেজ’ উইন্ডোতে এআই দিয়ে তৈরি ও এডিট ছবিগুলো সনাক্তকরণ শুরু করবে। গুগল সার্চ, লেন্স এবং অ্যান্ড্রয়েডের সার্কেল টু সার্চ ফিচারে সুবিধাটি যুক্ত হবে। ভবিষ্যতে ইউটিউবের মতো গুগলের অন্যান্য পণ্যে এ ধরনের সুবিধা প্রকাশ করা হতে পারে। গুগল জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে বছরের শেষে আরও তথ্য শেয়ার করবে।
এআই জেনারেটেড ছবি শনাক্ত করার জন্য কোয়ালিশন ফর কনটেন্ট প্রোভেন্যান্স অ্যান্ড অথেনটিসিটি (সি ২ পিএ) মেটাডেটার ওপর নির্ভর করবে গুগল।
সি২ পিএ হলো এই খাতের একটি সংঘ। এটি এই প্রযুক্তি নিয়ম ও নির্দেশিকা তৈরি করে যা ছবির উৎপত্তি ও ইতিহাস শনাক্ত করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ কখন ও কোথায় ছবিটি তৈরি করা হয়েছে সেটি এবং তৈরিতে ব্যবহার হওয়া টুল এবং সফটওয়্যার শনাক্ত করতে গুগলের ‘সি ২ পিএ মেটাডেটা’ ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহারকারীদের এআই ছবি চিনতে সাহায্য করবে। এ বছরের শুরুতে এই সংঘের কমিটির সদস্য হিসেবে যোগ দেয় গুগল।
এখন পর্যন্ত আমাজন, মাইক্রোসফট, ওপেনএআই এবং অ্যাডোবিসহ বিভিন্ন কোম্পানি সি২ পিএ-তে যোগ দিয়েছে। তবে হার্ডওয়্যার নির্মাতাদের মধ্যে সাড়া কম ফেলায় সি২ পিএ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন ফেলেছে। বর্তমানে এটি শুধু কয়েকটি সনি ও লাইকা ক্যামেরার মডেলে পাওয়া যায়।
এ ছাড়া সি২ পিএ মেটাডেটা অন্যান্য মেটাডেটার মতো অপসারণ করা বা মুছে ফেলা যেতে পারে। অথবা এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যে তা পড়া সম্ভব হয় না। ফ্লাক্সের মতো জনপ্রিয় জেনারেটিভ এআই টুল এক্সএআইয়ের গ্রোক চ্যাটবটের মাধ্যমে ছবি তৈরি করে। সেগুলোর মাধ্যমে সি২ পিএ মেটাডেটা যুক্ত নেই। কারণ কোম্পানিগুলো এই মানকে সমর্থন করতে সম্মত হননি।
ডিপফেক ছবি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তাই এই ধরনের পদক্ষেপ বেশি প্রয়োজন। গত মে মাসের এক সমীক্ষায় বলা হয়, এআই কনটেন্ট দিয়ে প্রতারণার ঘটনা ২০২৩ ও ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ২৪৫ শতাংশ বেড়েছে। আর শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই বেড়েছে ৩০৩ শতাংশ।
ডেলয়েট অনুমান করছে, ডিপফেকের কারণে ক্ষতি ২০২৩ সালে ১২.৩ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২৩০ কোটি ডলার থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে ৪০ বিলিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছাবে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, অধিকাংশ মানুষ ডিপফেক মাধ্যমে প্রতারিত হওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং এআইয়ের মাধ্যমে ভুয়া তথ্যের প্রচারণা সম্ভাবনা সম্পর্কে চিন্তিত।