বিখ্যাত মার্কিন অ্যানিমেশন স্টুডিও পিক্সার দর্শকদের মুগ্ধ করে এসেছে তাদের ‘লাক্সো জুনিয়র’ চরিত্রটি দিয়ে। এই আদুরে ডেস্ক ল্যাম্প প্রতিটি পিক্সার মুভির শুরুতে কোম্পানিটির লোগোর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ডিজিটাল চরিত্র হিসেবে লাক্সো জুনিয়র পরিচিত হলেও এখন সেই জনপ্রিয় পিক্সার মাসকটকে বাস্তবে রোবট হিসেবে তৈরি করেছে অ্যাপলের একটি গবেষক দল।
অ্যাপলের এই নতুন রোবটের নাম ‘এলিগ্যান্ট’। অনেক রোবটের মতো এই রোবটও স্থানগত প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজ করতে পারে। তবে পিক্সারের ল্যাম্পের মতো এই রোবট বিভিন্ন অভিব্যক্তি দেখায়।
অ্যাপলের মেশিন লার্নিং রিসার্চ সাইটে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রের মাধ্যমে এই নতুন রোবটের পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। রোবটগুলো কার্যকর ও আকর্ষণীয় করার দিকে মনোনিবেশ করেছেন অ্যাপলের গবেষকেরা। তারা পরীক্ষা করেছে যে, মানুষ কীভাবে একটি অভিব্যক্তিপূর্ণ রোবটের সঙ্গে এবং শুধু কাজভিত্তিক রোবটের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে। গবেষকেরা ছয়টি আলাদা কাজে বিষয়টি পরীক্ষা করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, যখন রোবটটিকে বাইরে আবহাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, ঠিক মানুষের মতো এটি জানালার দিকে তাকায়। তারপর সে আবহাওয়ার তথ্য দেয়।
আবার যদি তাকে ডেস্কের অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে বলা হয়, এটি তার শরীর প্রসারিত করে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য প্রস্তুত হয়। এটি রান্নাঘরে সংগীতের তালে নাচে এবং যখন বলা হয় যে, বাড়ির বাইরে ঘোরার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, তখন হতাশা প্রকাশ করে।
এ ছাড়া প্রোটোটাইপ রোবটটি আরও কিছু আচরণ দেখায়। দুষ্ট বিড়ালের মতো এটি কিছু কাঠের ব্লক উলটে ফেলে দেয়। এটি একটি বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টানোও অনুসরণ করে, যাতে এটি সব সময় পৃষ্ঠাগুলোর ওপর আলো ফেলে।
অ্যাপলের গবেষণা দল জানিয়েছে, এ ধরনের অভিব্যক্তিপূর্ণ রোবটগুলো মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একদিকে যেখানে রোবটগুলো শুধু কাজ করে যায়, সেখানে অভিব্যক্তিপূর্ণ আচরণ এই রোবটকে ব্যবহারকারীর কাছে আরও আকর্ষণীয় ও মানবিক করে তোলা। বিশেষ করে সামাজিক কাজের ক্ষেত্রে এটি এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে, যেখানে প্রযুক্তি শুধু কাজের টুল নয়, বরং একটি বন্ধু বা সহযাত্রী হিসেবে আপনার পাশে দাঁড়াতে পারে।
তথ্যসূত্র: ম্যাশাবল