রাজনীতি তো বটেই, একের পর এক উদ্ভট কথা আর কাণ্ডের জন্যও আলোচনায় থাকেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বুধবার (২ এপ্রিল) বিশ্বজুড়ে শতাধিক দেশের ওপর পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি। এরপর থেকেই এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানা গুরুগম্ভীর আলোচনা, বিশ্লেষণ চলছে। আবার সামাজিক মাধ্যমে চলছে ট্রোলও।
কারণ, তিনি অস্ট্রেলিয়ার এমন দুটি দ্বীপের ওপর শুল্কারোপ করেছেন, যেখানকার বাসিন্দা কেবল পেঙ্গুইন! আর তা নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে কৌতুক, ব্যঙ্গ। তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন সব মিম। এ ইস্যুতে ঠাট্টা করেছেন ট্রাম্পের সাবেক যোগাযোগপ্রধানও। বলেন, ‘পেঙ্গুইনরা তো আমাদের বহুদিন ধরেই ঠকাচ্ছে!’
ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘ট্রাম্প পেঙ্গুইনদেরও ছাড়লেন না, কিন্তু পুতিনকে ছেড়ে দিলেন!’ রাশিয়ার ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ না কারার বিষয়ে হোয়াইট হাউসের ব্যাখ্যা—মস্কোর বিরুদ্ধে আগে থেকেই নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেখানে কোনো ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বাণিজ্য নেই, যাতে নতুন করে শুল্ক আরোপ করা যায়।
তবে মিম ও ঠাট্টায় ভরে গেছে ইন্টারনেট। ট্রাম্পের এই বিশ্বব্যাপী শুল্কনীতি বিশ্ববাজারে বড় প্রভাব ফেলেছে।
গত বুধবার (২ এপ্রিল) বিশ্বের শতাধিক দেশে নতুন করে শুল্ক ঘোষণা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দেশটির সব আমদানি পণ্যে ১০ শতাংশ বেসলাইন শুল্ক আগামীকাল শনিবার থেকে কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া পাল্টা শুল্কগুলো ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।
এটিকে মার্কিন বাণিজ্যের জন্য ‘মুক্তির দিন’ বলেও অভিহিত করেন ট্রাম্প। কিন্তু শুল্ক ঘোষণার পর এক দিনেই মার্কিন শেয়ারবাজারগুলো থেকে উধাও হয়ে গেছে ২ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন (২ লাখ ৪০ হাজার কোটি) ডলার। একই সঙ্গে মার্কিন মুদ্রা ডলারের মানেরও অবনতি হয়েছে। কোভিড মহামারির পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজারে এত বড় পতন দেখা গেল।
এরপরও আখেরে মার্কিনরাই লাভবান হবে—এমনটাই ভাষ্য ট্রাম্প প্রশাসনের। তাদের যুক্তি, পাল্টা শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বিদেশি পণ্যকে আরও ব্যয়বহুল করে আমেরিকান উৎপাদনকে উৎসাহিত করা যাবে। তবে সমালোচকেরা সম্ভাব্য নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে সতর্ক করছেন, যেমন যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা মূল্যবৃদ্ধি, প্রভাবিত দেশগুলোর পক্ষ থেকে প্রতিশোধমূলক শুল্ক এবং বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত।
অবশ্য ট্রাম্প প্রশাসন ইঙ্গিত দিয়েছে, কিছু শুল্ক আলোচনা করে কমানোর সুযোগ রয়েছে।