ফিচার ডেস্ক
বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ এবং লৈঙ্গিক সমতা নিশ্চিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইউএন উইমেন নতুন এক অংশীদারত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ঢাকার ইইউ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই চুক্তির আওতায় ৪ দশমিক ৮ মিলিয়ন ইউরো বা প্রায় ৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই অর্থ জনপরিসর, কর্মক্ষেত্র এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন ও লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যয় হবে।
নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং নারী নেতৃত্ব ও অধিকার রক্ষায় কর্মরত সংগঠনগুলোর ক্ষমতায়ন এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে ইউএন উইমেন বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক লৈঙ্গিক সমতা ও মানবাধিকার মানদণ্ড বাস্তবায়নে উৎসাহিত করবে। এর মধ্যে রয়েছে ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউর সুপারিশ, নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য রোধ এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৫.১.১ অর্জনের চেষ্টা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক ও আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি ইউএন উইমেনের গত পাঁচ বছরের প্রতিরোধমূলক কর্মসূচির ভিত্তিতে বরাদ্দ করা অর্থ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ব্যয় করা হবে।
নীতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন: জনপরিসর, কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে নীতি, কাঠামো ও সংস্থান উন্নত করা।
সামাজিক ও লৈঙ্গিকভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন: নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক চিন্তাধারা দূর করতে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।
নারী অধিকার ও নাগরিক সংগঠনগুলোর ক্ষমতায়ন: লৈঙ্গিক সমতা অর্জনে নারী সংগঠনগুলোর ভূমিকা ও নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করা।
ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন, নারী ও মেয়েদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং লৈঙ্গিক সমতা অর্জন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম অগ্রাধিকার। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে নারীদের জন্য হয়রানি ও বৈষম্যমুক্ত একটি ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
আর ইউএন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং বলেন, ‘নারী অধিকার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অংশীদারত্ব নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধ, বৈষম্যমূলক সামাজিক নিয়ম মোকাবিলা এবং নাগরিক সমাজে বিনিয়োগের মাধ্যমে লৈঙ্গিক সমতা অর্জনের পথ আরও সুসংহত করবে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএন উইমেনের এই যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশে নারীদের জন্য একটি নিরাপদ ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে গৃহীত এই প্রকল্প বাংলাদেশের নারীদের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা যায়।