বরগুনার তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়ন যুবলীগ সহসভাপতি ও চন্দনতলা আব্দুল গফুর দাখিল মাদ্রাসার কৃষিবিজ্ঞান শিক্ষক বশির জোমাদ্দারের বিরুদ্ধে ওই মাদ্রাসার প্রাক্তন এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীর স্বামী শনিবার (৩০ মার্চ) রাতে তালতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, তালতলী উপজেলার পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের চন্দনতলা আব্দুল গফুর দাখিল মাদ্রাসার কৃষিবিজ্ঞানের শিক্ষক বশির জোমাদ্দার ওই মাদ্রাসার প্রাক্তন এক ছাত্রীকে প্রায় মোবাইলে ফোনে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন। মোবাইল ফোন না ধরলে তিনি বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতেন—এমন অভিযোগ ওই ছাত্রীর।
যুবলীগ নেতার উত্ত্যক্ত সইতে না পেরে ওই ছাত্রী ঘটনা তাঁর স্বামীকে জানান। কিন্তু স্বামীও তাঁকে নিবৃত্ত করতে ব্যর্থ হন। পরে শনিবার রাতে ওই মাদ্রাসাছাত্রীর স্বামী বিচার চেয়ে তালতলী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানাবিধ নারী ঘটিত অভিযোগ রয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে ছিলেন। ভেবেছিলাম এখন থমবে। কিন্তু তা-ও তিনি থামলেন না। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
ওই ছাত্রী বলেন, ‘বশির জোমাদ্দার আমার শিক্ষক। একজন শিক্ষক হয়ে তিনি কীভাবে ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিতে পারে। স্যারকে বহুদিন বুঝিয়েছি। কিন্তু তিনি তা মানতে নারাজ। মোবাইল ফোন ধরা বন্ধ করলে স্যার বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানি করতেন। হুমকি দিতেন আমার স্বামীর কাছে আমার বিরুদ্ধে বলে সংসার ভাঙবে। নিরুপায় হয়ে আমি স্যারের সব কুকর্মের কথা স্বামীকে বলেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামীর সহযোগিতা নিয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি এ ঘটনার শাস্তি দাবি করছি।’
ওই ছাত্রীর স্বামী ঘটনার সততা স্বীকার করে বলেন, ‘লম্পট শিক্ষকের কঠিন শাস্তির দাবি জানাই।’
যুবলীগ নেতা বশির জোমাদ্দার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আমার ছাত্রীর আনীত অভিযোগ মিথ্যা। আমাকে হয়রানি করতেই এমন অভিযোগ এনেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই ছাত্রী আমার কাছে সার্টিফিকেট ও নতুন ভোটার ছবি তোলার বিষয়ে দুই দিন ফোন দিয়েছিল। আমি তো তাকে কোনো দিন ফোন দিইনি।’
তবে কেন আপনার বিরুদ্ধে আপনার ছাত্রী এমন অভিযোগ করবেন—এ প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
চন্দনতলা আব্দুল গফুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবুল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তালতলী থানার (ওসি) মোহাম্মদ শাহজালাল বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে সত্যতা পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’