পটুয়াখালী জেলা কারাগারের ব্যারাক থেকে সাজেদুর রহমান মিলন (৪২) নামের এক কারারক্ষীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার কারারক্ষীদের ব্যারাক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
সাজেদুর রহমান শেরপুর জেলার শ্রীবরদী থানার বাসিন্দা। তাঁর বাবা মো. সাইফুল ইসলামও কারারক্ষী ছিলেন। তিনি এক ছেলে ও দুই কন্যাসন্তানের বাবা। তিনি গত ৩১ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ থেকে বদলি হয়ে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলা কারাগারে যোগ দেন।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে সাজেদুর রহমানের ডিউটি শুরু হয় এবং সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়। ডিউটি শেষে তিনি বাসায় না ফেরায় স্ত্রী ফাহিমা বেগম কারাগারে গিয়ে তাঁকে খুঁজতে শুরু করেন।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর কারারক্ষীরা নিচতলার একটি ব্যারাকের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে তাঁকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফাহিমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘সাজেদুর রহমান বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। এ কারণে তিনি কারাগারের জেলার মো. লাভলু স্যারের কাছে ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু জেলার স্যার ছুটি না দিয়ে উল্টো অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বান্দরবানে বদলির হুমকি দেন।’
তিনি বলেন, ‘স্যার যদি আমার স্বামীকে ছুটি দিতেন, তবে আজ এমনটা হতো না।’
সহকর্মী কারারক্ষীদের ধারণা, ঈদের ছুটির আবেদন নামঞ্জুর হওয়া, উপরন্তু অপমানজনক ভাষায় গালিগালাজ ও বদলির হুমকির কারণে মানসিক চাপে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে কথা বলতে কারাগারের জেলার মো. লাভলুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়ে সাড়া না পাওয়ার তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। তবে জেল সুপার মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার সহকর্মী ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’
পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ বলেন, ‘সাজেদুর রহমানের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি শুনেছি। বর্তমানে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে এবং ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’