দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের অন্যতম প্রবেশদ্বার পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এই অঞ্চলের জেলাগুলো ফেরিমুক্ত হলেও পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা এখনো ফেরির দুর্ভোগ থেকে মুক্ত হতে পারেনি। দশমিনা-গলাচিপা-বাউফল-বরিশাল মহাসড়কে বগা এলাকায় লোহালিয়া নদীতে সেতু না থাকায় বেশ অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে তিন উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে। এবারের ঈদযাত্রায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
বগা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হলেও এখনো তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঈদের বাড়ি আসা এলাকার লোকজন। তাঁরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। কিন্তু বাড়ির কাছের বগা সেতু না হওয়ায় আনন্দটাই মাটি হয়ে যায়। কেননা, এখানকার ফেরি চালানো হয় অনেকক্ষণ পর পর। এতে ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে এক ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়। ফেরির স্বল্পতা ও তীব্র যানজটের কারণে শিশু, নারী, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সময়মতো রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স পারাপার হতে না পারায় ঘটে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাউফল-দশমিনা-গলাচিপার মানুষ নৌপথের পাশাপাশি সড়কপথে চলাচল করছে। বগা পয়েন্টের ফেরির জন্য ভোগান্তির বিষয় তুলে ধরে চেয়ারম্যান পরিবহনের চালক মনিরুজ্জামান হৃদয় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা থেকে সড়কপথে বাউফলসহ বাকি দুটি উপজেলায় আসতে সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা; কিন্তু এই ফেরির জন্য এক থেকে দেড় ঘণ্টা বেশি সময় লাগে। এই পয়েন্টে সেতু হলে সময় সাশ্রয় হবে; এর সঙ্গে ভোগান্তিও কমবে।
চাকরিজীবী মেহেরাব হোসেন অভি বলেন, ‘রোজা রেখে বাস জার্নি বেশ কষ্টকর। বেলা ১টার দিকে গাড়িতে উঠিয়ে বাড়ির উদ্দেশে সব পথ ভালোই আসলাম ফেরিবিহীন; কিন্তু বাড়ির কাছে এসে আটকে গেলাম ফেরির জন্য। এই ফেরির অভিশাপ থেকে কবে মুক্তি পাব জানি না।’
সেতুর সম্ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জামিল আক্তার বলেন, লোহালিয়া নদীর বগা পয়েন্টে একটি সেতু নির্মাণের জন্য ২০২১ সালের মার্চে চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই হয়েছে। জমি অধিগ্রহণসহ মোট কত খরচ হবে, সে বিষয়ে প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। ওই কাজ শেষ হলে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদী।