ঢাবি প্রতিনিধি
ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্যের সঠিক ইকোসিস্টেম নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ছয়টি প্রস্তাবনা দিয়েছে আঁচল ফাউন্ডেশন। আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আঁচল ফাউন্ডেশনের সভাপতি তানসেন রোজ।
ছয় প্রস্তাবনা হলো—মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে গণমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য অভিজ্ঞ মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স তৈরি করা। মানসিক স্বাস্থ্য–সম্পর্কিত সমস্যাগুলো উদ্ঘাটন করে সমাধানের ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা; জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যেসব ছাত্র-জনতা আহত হয়েছে এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত—তাঁদের তালিকা তৈরি করে মানসিক সেবা প্রদান করা। আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যকে সরকারি বা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান নিশ্চিত করা (বিভিন্ন শ্রেণি, পেশার মানুষ ও সংখ্যালঘুরা এর আওতায় পড়বে) ; প্রাথমিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী এবং মনোবিজ্ঞানী বা মনোচিকিৎসক—এই দুয়ের সমন্বয় করে সব জেলা-উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে একটি মানসিক স্বাস্থ্য কর্নার তৈরি করা।
প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ট্রেনিংয়ের আওতায় এনে দক্ষ জনবলে রূপান্তর করা এবং প্রয়োজনে তাদের মাধ্যমে স্থানীয় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান সচল রাখা; স্কুল, কলেজ, আলিয়া ও কওমি মাদ্রাসা এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের জন্য ট্রমা রিকভারির কর্মশালা এবং মানসিক স্বাস্থ্য–সংক্রান্ত সচেতনতামূলক কার্যক্রমের আয়োজন করা; সরকারি উদ্যোগে একটি ‘হটলাইন সেবা’ চালু করা, যার মাধ্যমে সব অঞ্চলের ছাত্র–জনতা মনোবেদনা শেয়ার করতে পারেন ও প্রয়োজনে কাছাকাছি মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন এবং একটি গবেষণা সেল গঠন করা এবং বায়ো-ইনফরমেটিক্স ব্যবহার করে সেবা প্রদান–পরবর্তী পুরো সময়ের গবেষণালব্ধ তথ্য জাতীয়ভাবে সংরক্ষণ করা।
তানসেন রোজ বলেন, ‘দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। মানসিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করতে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যসংকট নিরসনে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।’
উল্লেখ্য, দেশের তরুণ সমাজকে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা, উন্নয়ন মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে দক্ষ করে তুলতে আঁচল ফাউন্ডেশন ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল তার পথচলা শুরু করে। মানসিক স্বাস্থ্য গঠন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এ সংগঠন।