ফরিদপুরের দুটি যৌনপল্লির শিশুদের জন্মনিবন্ধন জটিলতা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর নিবন্ধনের কাজ শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব শিশুর পিতৃপরিচয় ছাড়াই মায়ের পরিচয় এবং কয়েকটি তথ্যের ভিত্তিতে জন্মনিবন্ধন করা হবে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর পৌরসভার প্রশাসক চৌধুরী রওশন ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে শহরের রথখোলা যৌনপল্লি পরিদর্শনে যান চৌধুরী রওশন ইসলাম। পরে রথখোলা যৌনপল্লিসংলগ্ন শাপলা মহিলা সংস্থার কার্যালয়ে পল্লির বাসিন্দাদের নিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় পৌরসভার জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট সবাই উপস্থিত ছিলেন। এ সময় শিশুদের নিয়ে পৌরসভায় গেলে জন্মনিবন্ধন করে দেওয়া হবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
পরিদর্শনের সময় রওশন ইসলাম জানান, যৌনপল্লির শিশুরা এ দেশের নাগরিক। জন্মনিবন্ধন তাদের অধিকার। এই শিশুদের নানা কারণে জন্মনিবন্ধন করতে সমস্যা হতো। এখন থেকে সেই জটিলতা আর থাকবে না। এখানকার শিশুদের টিকা কার্ড বা কোনো চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে বয়স নির্ধারণ করে যতটুকু পরিচয় পাওয়া যায়, সেটার ভিত্তিতেই জন্মনিবন্ধন করা হবে।
রওশন ইসলাম বলেন, ‘এই শিশুদের জন্মনিবন্ধন করতে না পারায় স্কুলে ভর্তিসহ তারা অনেক ধরনের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জেনেছি। নানা ধরনের হয়রানি ও অবহেলার শিকার হচ্ছে তারা। তাদের সকল নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম সহজ করা হয়েছে। এখন থেকে তারা আর পরিচয়ের সংকটে ভুগবে না।’
রওশন ইসলাম সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এখানে যেন কেউ একাধিক নাম ব্যবহার করে একাধিক জন্মনিবন্ধন করতে না পারে, এ বিষয়ে খেয়াল রাখবেন। এ জন্য শিশু ও তার মায়ের ছবি জন্মনিবন্ধনের সঙ্গে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তানজিলুর রহমান, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল, সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. আহাদুজ্জামান, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ মামুন হোসেন, শাপলা মহিলা সংস্থার নির্বাহী পরিচালক চঞ্চলা মণ্ডল, উপনির্বাহী পরিচালক শ্যামল প্রকাশ অধিকার, রীনা সাহা, লক্ষ্মণ বিশ্বাসসহ সাংবাদিক ও পল্লির বাসিন্দারা।
এর আগে আজকের পত্রিকায় ৯ ফেব্রুয়ারি অনলাইনে ও ১০ ফেব্রুয়ারি ছাপা সংস্করণে ‘ফরিদপুরের যৌনপল্লি: জন্মনিবন্ধন জটিলতায় স্কুলের বাইরে শিশুরা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ সব দপ্তর নড়েচড়ে বসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই পল্লিতে শিশুদের জন্মনিবন্ধনের কাজ শুরু হয়েছে।