বারবার চিত্রনায়িকা পরীমণিকে রিমান্ডে নিয়ে বিচার বিভাগকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। গত ২ সেপ্টেম্বর পরীমণির রিমান্ডের বিষয়ে যে আদেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ, সেই আদেশে এমন মন্তব্য করা হয়েছে। পাঁচ পৃষ্ঠার এই আদেশ আজ বুধবার প্রকাশ করা হয়।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, পরীমণিকে তিন দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। প্রথম দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের যথেষ্ট সময় পাওয়া গেছে। এ সত্ত্বেও আইনগত ভিত্তি ছাড়াই আরও দুই দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ বিভাগকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে, মানুষের জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। একজন আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার আগে তাই পুলিশকে আইনি দিকটা বিবেচনায় নিতে হবে। আদালত আদেশে বলেছেন, হাইকোর্টের আদেশ ভঙ্গ করেই পরীমণিকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অপরাধ শুধু পুলিশের সমস্যা নয়, এটা একটা সামাজিক সমস্যাও।
আদালত আদেশে বলেছেন, পুলিশ বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা রয়েছে। সেই আস্থা যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কিন্তু দেখা গেছে, আইন না মেনেই তারা রিমান্ডে নিচ্ছে।
এমন সব মন্তব্য করার পর আদালত দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ডের বিষয়ে রিমান্ড প্রদানকারী দুই ম্যাজিস্ট্রেটকে ১৩ সেপ্টেম্বর লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন। অন্যদিকে তদন্ত কর্মকর্তা কাজী গোলাম মোস্তফাকে ১৫ সেপ্টেম্বর মামলাসংক্রান্ত সব নথিপত্র (কেস ডকেট) নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হতে বলা হয়েছে।
গত ২৯ আগস্ট উচ্চ আদালতের রায় না মেনে মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণির বারবার রিমান্ড চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। আবেদনে পরীমণিকে রিমান্ডে নেওয়ার ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের রায় না মানার অভিযোগ আনা হয়েছে। আইন ও সালিস কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন এ আবেদন করেন।
গত ১৯ আগস্ট রাজধানীর বনানী থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমণির তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত পরীমণির এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে পরীমণিকে প্রথম দফায় চার দিন ও দ্বিতীয় দফায় দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি।
গত ৪ আগস্ট পরীমণিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়।