গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় গিয়ে দৈত্যদানব হয়ে ওঠে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বের দাবি জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নলিন নঈম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক পথসভায় এ দাবি করেন নুরুল হক।
পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, ‘জনগণের যে প্রত্যাশা, এই যে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় গিয়ে দৈত্য-দানব হয়ে ওঠে, রাজনৈতিক দলের নেতারা জমিদার হয়ে ওঠে। এই জমিদার যেন না হতে পারে, দৈত্য-দানব যেন না হতে পারে, তার জন্য আমরা বলেছি যে, সংসদে একটা ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থা থাকতে হবে। যেই রাজনৈতিক দল জনগণের ভোট পাবে, তারা যেন সংসদে থাকতে পারে।’
নুরুল হক বলেন, ‘সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের একটা বিধান রয়েছে, অর্থাৎ কোনো দল যদি ১ পার্সেন্ট ভোট পায়, সারা বাংলাদেশে সেই দলের তিনজন সংসদ সদস্য প্রার্থী থাকবেন। কোনো ছোট দল যদি ১০ পার্সেন্ট ভোট পায়, যেহেতু ৩০০ আসন, তার ৩০ জন এমপি থাকবেন। তাহলে কোনো একক দলের মাতব্বরি সংসদে থাকবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থা চায় আমাদের দল, জামায়াতসহ বিভিন্ন দল। একমাত্র বড় এক-দুটি দল ছাড়া সব দল এই সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে।’
প্রতিকূল সময়ে ধারাবাহিক লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণঅধিকার পরিষদের জন্ম হয়েছে উল্লেখ করেন নুরুল হক। তিনি বলেন, ‘আজকের যে এই গণ-অভ্যুত্থান, যে পাটাতনের (কোটা সংস্কার আন্দোলন) ওপর দাঁড়িয়ে গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে। ২০১৮ সালে সেই কোটা সংস্কার আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিলাম আমরা। সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলাম আমরা। ২০১৮ সালে আমরা সেই আন্দোলন করতে গিয়ে নির্যাতিত-নিষ্পেষিত হয়েছি। ইউটিউবে যান, ফেসবুকে যান, কোটা সংস্কার আন্দোলনের হামলা লিখলেই সমস্ত ডকুমেন্ট চলে আসবে, আপনারা দেখতে পারবেন।’
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক শাকিলউজ্জামানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান, অর্থ সম্পাদক ফাহিম, টাঙ্গাইল জেলা সাধারণ সম্পাদক নবাব আলী, টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মো. সজিব, টাঙ্গাইল জেলা বার সমিতির সদস্য ও কেন্দ্রীয় আইনজীবী পরিষদের সদস্য আসাদ ইসলাম প্রমুখ।
পথসভা শেষে ভিপি নুর ও তাঁর দলের বিভিন্ন নেতা-কর্মী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত গোপালপুরের ইমনের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আর্থিক সহায়তা দেন।