শেখ জাবেরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জে রাতের আঁধারে মধুমতী নদীর তীর থেকে মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিভিন্ন ইটভাটার মালিকের বিরুদ্ধে। এতে ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভারী বৃষ্টিতে তীর ভেঙে গিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার শুকতাইল ইউনিয়নের জয়নগর ও চরতালা গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, মধুমতী নদীর তীরে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে মাটি কেটে নিচ্ছেন ইটভাটার মালিকেরা। রাতের আঁধারে ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীর করে এক্সকাভেটর দিয়ে ফসলি জমি ও নদীর তীরের মাটি কাটা হচ্ছে। সুযোগ পেলে শুধু রাতে নয়, দিনেও কাটা হচ্ছে মাটি। অনেক ইটভাটার মালিক নদীতে ইট-সুরকি ফেলে দখলের পাঁয়তারা করছেন।
চরতালা এলাকার বাসিন্দা দিন ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখানে রাতের বেলায়ও মাটি কাটতেছে আবার মাঝে মাঝে দিনের বেলাও মাটি কাটতেছে। নদীর পাড়ের কৃষিজমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে অনেক ক্ষতি হচ্ছে। রাতে মাটি কাটায় আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতেছে। মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় মাটি পড়ে। এতে ধুলার জন্য রাস্তা দিয়ে হাঁটা যায় না।’
চরতালা গ্রামের নদীর পাড়ে চাষাবাদের জমির মালিক মিলন সিকদার বলেন, ‘আমার ১৫ বিঘা জমি রয়েছে। জমির পাড় ঘেঁষেই ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীর করে নদী পর্যন্ত মাটি কেটে নিয়ে গেছে। একটু বড় বৃষ্টি হলেই আমার জমির মাটি ধসে পড়বে। এ বছরও এক্সকাভেটর ও মাটি টানা ট্রলি চলাচলের কারণে জমির ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে।’
জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা বেলায়েত মোল্লা বলেন, ‘যেভাবে নদীর তীর থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে, তাতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। এভাবে মাটি কাটা রোধে কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রেফাত জামিল বলেন, ‘মধুমতী নদীর তীরে জয়নগর খেয়াঘাটসংলগ্ন জায়গা থেকে রাতের আঁধারে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আমরা মাঠ পর্যায়ে সেখানে গিয়ে যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’