সাভারে করোনার টিকা গ্রহীতা দুই জাবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগে তিনজন রেডক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
আজ সোমবার সকালে গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে সাভার মডেল থানা থেকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গতকাল রোববার দিবাগত রাতে সাভারের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল রোববার রাতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় আধা ঘণ্টা বিক্ষোভ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তাঁরা।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাভারের কাতলাপুরের অশোক কুমার দাসের ছেলে অর্ঘ্য অর্পন দাস (২১), সাভারের ব্যাংক কলোনির এলাকার শাখাওয়াত হোসেনের ছেলে মো. আকিব হোসেন নুর (১৯) এবং একই এলাকার আসাদুল হকের ছেলে মো. সাব্বির হোসেন (২২)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুর একটার দিকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রে টিকা নিতে যান শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হোসাইন ইমন ও মাজেদুল ইসলাম। তাঁরা দুজনেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। টিকা নেওয়ার জন্য লাইনে থাকা অবস্থায় বেলা ১টায় টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় অপেক্ষারত টিকা প্রত্যাশীদের অনেকে লাইন শেষ হওয়া পর্যন্ত টিকা দেওয়ার অনুরোধ জানান। টিকাদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীরা এতে রাজি না হলে তাঁদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী মিলে শিক্ষার্থী ইমন ও মাজেদকে মারধর করেন। পরে তাঁদের সাভার মডেল থানায় নিয়ে যান তাঁরা। সেখান থেকে ইমন ও মাজেদ অসুস্থ অবস্থায় সাভারে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন।
এ বিষয়ে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমরা দুঃখিত। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনায় জড়িত টিকা বুথে থাকা রেডক্রিসেন্ট কর্মীদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁরা মূলত স্বেচ্ছাসেবক, তাঁরা কোনো সরকারি কর্মী নয়। তাঁদের বাদ দিয়েই আমাদের স্বাভাবিক টিকা কার্যক্রম চলমান আছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহিন বলেন, ‘টিকা কেন্দ্রের সময় শেষ হয়েছে বলে তাদের মারধর করেছে। বিষয়টি নিয়ে মিটমাটের জন্য বসা হয়েছিল। কিন্তু কোনো মীমাংসা হয়নি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ভিসির আদেশে আমি নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করতে বাধ্য হয়েছি।’
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এস এম শাহারিয়ার বলেন, গতরাতে মামলা দায়ের করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলায় এজাহারনামীয় তিনজনসহ আরও অজ্ঞাত ৫ থেকে ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।