ঢাকার আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি আবারও অশান্ত হয়ে উঠছে । বেতন বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবিতে গত রোববার থেকে শ্রমিকেরা নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছেন। দাবি আদায়ের জন্য শ্রমিকেরা আজ সোমবার আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিক অসন্তোষের মুখে শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারা মোতাবেক গতকাল রোববার রাতে ২৮টি কারখানা নতুন করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগে থেকে আরও ১৫টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ছিল। এ ছাড়া শ্রমিকেরা কাজ না করায় আজ আটটি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা করার দাবিতে নিট এশিয়া, ডেকো, এনভয়, ভিনটেজ, নাসা, সেতারাসহ বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিকেরা গতকাল রোববার দুপুর বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে নরসিংহপুর এলাকার একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বের হয়ে আশপাশের কারখানায় হামলা চালান। এর জের ধরেই আজকে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ রয়েছে।
এদিকে জেনারেশন নেক্সট নামের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা আজ সোমবার সকাল থেকে কয়েক ঘণ্টা ধরে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় সড়কটিতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাব, সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পুরো শিল্পাঞ্চলে টহল জোরদার করেছেন। অনেক কারখানার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা গেছে ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার মালিক বলেন, গত রোববার কয়েকটি কারখানায় হামলার ঘটনায় শিল্পাঞ্চলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর জের হিসেবেই আজ সোমবার থেকে নতুন করে ২৮টি কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার রাতেই কারখানাগুলোর সামনে বন্ধের নোটিশ টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, সংগত কোনো দাবি ছাড়াই কিছু পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলন করছেন। ক্রমাগত শ্রমিক অসন্তোষের মুখে পোশাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, যা আমাদের পোশাক রপ্তানিতে প্রভাব পড়বে।
আজ বেলা ১টার দিকে যোগাযোগ করা হলে শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, ‘আজকে অধিকাংশ কারখানায চালু রয়েছে । ১৩ (১) মোতাবেক বন্ধ রয়েছে ৪৩টি কারখানা । শ্রমিক অসন্তোষের কারণে আটটি কারখানা আজকের জন্য ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’