খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার পর আজ শুক্রবার পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন তাঁরা। আজ সন্ধ্যায় প্রেস ব্রিফিংকালে এ অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। কয়েকজন ধাপে ধাপে তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন। কেউ নিজের পরিচয় দেননি।
ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি ঘটনার শেষে প্রশাসক এসে শুধু মাসুদ স্যারের (কুয়েট উপাচার্য) নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। কিন্তু এর আগে বা পরে কখনোই কোনো নিরাপত্তা বাহিনী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। আমরা এখনো অভিভাবকহীন ও নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাসে অবস্থান করছি।’
ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশের মানুষ জানে, কুয়েটের নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর কীভাবে ছাত্রদল ও বিএনপি দ্বারা সন্ত্রাসী আক্রমণ করা হয়েছে। আমরা মাসুদ স্যারের কাছে দাবি জানিয়েছি ছাত্রদল আমাদের ওপর যে হামলা করেছে—এমন একটি বিবৃতি কুয়েটের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে দিতে। কিন্তু এর পদক্ষেপ তিনি নেননি। এই হামলার দায় তিনি স্বীকার করেন না। তিনি পদত্যাগ করেননি।’
শিক্ষার্থীদের দাবি ছয়টি উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ‘দেশবাসী যারা আমাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছে, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তবে অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো, উপদেষ্টারা হাজার হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, তারা আমাদের সাথে একটিবারও যোগাযোগ করেনি। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি পাঠিয়েছি। অভিভাবকহীন ও নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং একাডেমিক কার্যক্রম দ্রুত পুনরায় চালু করার জন্য প্রদক্ষেপ নিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এর আগে আজ বিকেলে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা তাঁদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। তখন কুয়েটের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহিন জুনায়েদ বলেন, ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি এবং উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগের দাবি রয়েছে তাঁদের। এসব দাবি বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
উল্লেখ্য, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে কুয়েটে গত মঙ্গলবার ছাত্রদলের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।