যশোরের মনিরামপুরে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষিকাকে মারধর করার অভিযোগে গ্রেপ্তার ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজানকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে পৌর যুবলীগের সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবি স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গত রোববার দলীয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘন, গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ ও সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় মিজানুর রহমান মিজানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিল পৌর যুবলীগ। সেখানে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে জবাব না পাওয়ায় তাঁকে সংগঠন থেকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুবলীগের মনিরামপুর পৌর শাখা কমিটি।
অব্যাহতিপত্রে বলা হয়েছে, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তাঁর কর্মকাণ্ডে সংগঠনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২২ আগস্ট দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছালিমা আক্তারকে শ্রেণিকক্ষে মারধরের অভিযোগ ওঠে যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পর গত ২৪ আগস্ট বিকেলে থানার পুলিশ মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে মিজানুর রহমান কারাগারে আছেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় দল তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশের পর সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন
মামলা ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মিজানুর রহমানের ছেলে রাকিবুল ইসলাম দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। গত মঙ্গলবার দুষ্টুমি করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছালিমা আক্তার ওই ছাত্রকে শাসন করেন। এরপর রাকিবুল বাড়িতে গিয়ে কান্নাকাটি করে। তখন বিদ্যালয়ে গিয়ে ছালিমা আক্তারকে মারধর করেন রাকিবুলের বাবা যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান। একপর্যায়ে শিক্ষিকাকে চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে যান মিজানুর। তখন অন্য শিক্ষকেরা এসে মিজানকে থামান।
মারধরের শিকার শিক্ষিকা ছালিমা আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাকিবুলের বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশে। শাসন করার ঘটনায় সে বাড়িতে গিয়ে নালিশ করে। তখন ওই শিক্ষার্থীর বাবা-মাসহ বাড়ির লোকজন স্কুলে ছুটে আসে। এ সময় আমি একটি কক্ষে দায়িত্বরত ছিলাম। মিজান এসে শিক্ষার্থীদের সামনে আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। পরে চুল ধরে টেনে মাঠে নিয়ে যায়।’
ছালিমা আক্তার আরও বলেন, ‘মিজানের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে আমি মনিরামপুর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি। পরে এসে থানায় মামলা দিয়েছি।’
দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহেব আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষিকা ছালিমা আক্তার ও অভিযুক্ত মিজানুরের বাড়ি পাশাপাশি। স্কুলের বেসিন ধরায় ছাত্র রাকিবুলকে “বাপ” তুলে কথা বলেন শিক্ষিকা। এরপর রাকিবুল বাড়ি গিয়ে বিষয়টি জানালে তার বাবা এসে শিক্ষিকাকে মারধর করেন।’