ভোট চুরি করলে হাত কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাহাতাবুল হক। প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখানে প্রশাসনের লোক যদি কেউ থাকেন তাহলে বলে দিয়ে যাই—ভোট চুরি করলে হাত কেটে নেওয়া হবে। ওই কাটা হাত নিয়ে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গণভবনের সামনে ঝোলানো হবে।’
গতকাল বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর, চক রাজাপুর ও মান্নানখালী এলাকার ৫ নং ওয়ার্ডের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এক নির্বাচনী সভায় খন্দকার মাহাতাবুল এ হুমকি দেন।
জানা যায়, খন্দকার মাহাতাবুল হক কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার তণুর সমর্থক। তার নির্বাচনী প্রচারণাতেই তিনি প্রশাসনকে হুমকি দেন। এখানে নৌকার প্রার্থী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
তাঁর বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিও ক্লিপে মাহাতাবুলকে হানিফের উদ্দেশ্য বলতে শোনা যায়, ‘ভোট চুরি করার চিন্তা করেন না, ঘরে বসে দুইবার এমপি হয়েছেন তো, পয়সা খরচ করেন নাই। এখন তো ভালোই খরচ করছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে, সেই টাকা দিয়ে নির্বাচন করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯৩ সালে আমি যখন শেখ হাসিনার সাথে খুলনা থেকে সৈয়দপুর সফরে ছিলাম, আমার মনে আছে হানিফ ভাই একজন তিন ফুটের মানুষ, বটগাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি নাকি আজ যুগ্ম সম্পাদক।’
এর আগে প্রবাসী আওয়ামী লীগের এই নেতাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘কুষ্টিয়া সদর আসনে আওয়ামী লীগের মার্কা দুইটা। একটি হলো ঈগল আরেকটি নৌকা। নৌকা নুহ নবীর নৌকা। আর এই পবিত্র নৌকাটাকে হানিফের মতো লোক, আতার (হানিফের চাচাতো ভাই) মতো লোক অপবিত্র বানিয়ে দিয়েছে। এই নৌকাটাকে পবিত্র বানাতে তরুণ সমাজের অহংকার পারভেজ আনোয়ার তণুকে দায়িত্ব দেব। আগামী দিনে আপনারা প্রস্তুত থাকবেন তণুকে আমরা নৌকায় চড়িয়ে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিয়ে যাব।’
এ সময় ভোটারদের উদ্দেশ্য মাহাতাবুল বলেন, ‘আপনারা ভয় করবেন না ভাই, ভয় করার সময় নেই। জননেত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কার বলেছেন, আমি নৌকা দিলাম একটা, স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলাম একটা। তোমরা ভালো কাজ করলে তোমাদের জনগণ ভোট দেবে।’
এ সময় হানিফের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এই সদর আসনের উপজেলায় তারা তো ভালো কাজ করে নাই ভাই, সমস্ত খারাপ লোককে নিয়ে তারা রাজনীতি করছে। আমার বাবা আওয়ামী লীগ করে, তণুর বাবা আওয়ামী লীগ করে কিন্তু তাদের মূল্যায়ন নেই। এই মূল্যায়নের জন্য আমাদের ঈগল মার্কাকে ভোট দিতে হবে।’
এ সময় সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার তণু উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা মাহাতাবুল হক জয়। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম তুলেছিলেন। মনোনয়নের দৌড়ে ছিটকে পড়লেও এই আসনের নৌকার প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফকে তিনি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে কুষ্টিয়া পৌরসভার ৫ বারের মেয়র আনোয়ার আলীর ছেলে পারভেজ আনোয়ার তণু স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তার প্রচারণায় নামেন তিনি।
এ ব্যাপারে খন্দকার মাহাতাবুল হক জয় আজকের পত্রিকাকে জানান, বুধবার সন্ধ্যায় ঈগল প্রতীকের একটি প্রচারণা সভায় বক্তব্য দিয়েছিলাম কোনো সমস্যা হয়েছে কি না এখন ফরিদপুরে আছি, ফিরে দেখা হবে।