দিনাজপুরে পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সাইফুল ইসলাম (৪২) নামে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরীফ উদ্দীন আহমেদ এ রায় প্রদান করেন। সেই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর সকালে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার শিংগীমারী তকেয়াপাড়া জমিরহাটে সুবল চন্দ্র দাসের মেয়ে পূজা রানী (৫) বাড়ির সামনে কাঁচাসড়কে প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করছিল। এ সময় একই এলাকার মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম পূজা রানীকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরে পূজা বাড়িতে ফিরে না আসলে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন পরিবারের লোকজন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে সাইফুল শিশুটির বাবাকে বলেন, আগামীকাল পূজাকে পাওয়া যাবে।
এ সময় অপর আসামি আফজাল হোসেন ওরফে কবিরাজ (৪৮) আগামী তিন দিনের মধ্যে পূজাকে পাওয়া যাবে বলে জানান। পরদিন সকাল ৬টার দিকে শিশুটির বাবা বাড়ির পার্শ্ববর্তী হলুদ খেতের মধ্যে অসুস্থ অবস্থায় খুঁজে পান। এ সময় তার কাপড় ও গোপনাঙ্গে রক্তের দাগ এবং মুখ ও গলায় নখের আঁচড় ছিল।
দীর্ঘ শুনানি, ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও মামলার আইনজীবীদের শুনানি শেষে ঘটনার মূল আসামি সাইফুল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। সেই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ সময় অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামি আফজাল হোসেন ওরফে কবিরাজকে বেকসুর খালাস করা হয়।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তৈয়বা বেগম বলেন, আসামি সাইফুলের দোষ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক তাঁকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। অপরদিকে, দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় আফজাল হোসেনকে বেকসুর খালাস করা হয়। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।