সিলেট-আখাউড়া রেলপথের শ্রীমঙ্গল-কুলাউড়া অংশে প্রায়ই নাট, বল্টু ও ক্লিপ চুরি হচ্ছে। এসব না থাকায় তীব্র গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যে কারণে এই অংশে বেশ কিছু এলাকাসহ অন্তত আটটি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সিলেট-আখাউড়া রেলপথের শ্রীমঙ্গল থেকে কুলাউড়া পর্যন্ত রেললাইনের শ্রীমঙ্গল, ভানুগাছ, শমশেরনগর, মনু, টিলাগাঁও, লংলা ও কুলাউড়া স্টেশনের মাঝে অনেক স্থানে ক্লিপ-হুক ও নাট-বল্টু নেই। অনেক যন্ত্রাংশ চুরি হওয়ার পরও লাগানো হচ্ছে না। নাট-বল্টু ও ক্লিপার না থাকায় তীব্র গরমে লাইন বাঁকা হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও পুরোনো সেতুগুলো সংস্কার হচ্ছে না। যে কারণে ২০১৮ সালে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সেতু ভেঙে ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হয়। গত বছর লাউয়াছড়ায় গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে কয়েকটি বগি উল্টে যায়। রেলপথ ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় লাউয়াছড়া উদ্যানের পাহাড়ি এলাকায় নিয়মিত ট্রেন আটকা পড়ে।
ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী সালাম সিকদার বলেন, ‘আমরা প্রায় সময় ব্যবসায়িক কাজে ট্রেনে যাতায়াত করি। সিলেট থেকে শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশন পর্যন্ত রেলপথ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই অঞ্চলে ট্রেন চলার সময় অনেক ভয় হয়। কোথাও দ্রুত গতিতে চলে আবার কোথাও ধীর গতিতে। রেলওয়ের তদারকির অভাবে রেলপথের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যাচ্ছে।’ পুরোনো এই লাইনকে নতুন করে মেরামতের দাবি জানান তিনি।
কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রুমান আহমেদ, শ্রীমঙ্গল স্টেশন মাস্টার শাখাওয়াত হোসেন ও ভানুগাছ স্টেশন মাস্টার কবির আহমদ বলেন, ‘ট্রেন আসার আগে লাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা তা-ই করি। আমাদের দায়িত্ব স্টেশনে। রেলপথ দেখাশোনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে। তবে পুরোনো কাটের লাইন থেকে মাঝেমধ্যে হুক-ক্লিপ চুরি হয়। নতুন পাকা লাইন থেকে এগুলো কম চুরি হয়। তাপমাত্রা অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে কোথাও কোথাও লাইন বাঁকা হয়। এসব স্থানে আমরা পানি, কচুরিপানা বা কাদা মাটি ব্যবহার করি।’