চাঁদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট (কচুয়া) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাইপাস সড়কের রাজমহল হোটেলের সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব আলম (৩২), চাঁপই ছাত্রলীগ নেতা মো. তুহিন (২৩), যুবলীগ নেতা গাজী রবিউল আউয়াল (২২), চাঁপই ছাত্রলীগ নেতা শেখ সজীব (২০), নূর মোহাম্মদ (২৩), শাওন (১৮) মো. মহিউদ্দিন (১৮), মেহেদী হাসান (১৮), শাহাদাত হোসেন (২০)। আহতদের মধ্যে তুহিন ও রবিউলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত ছাত্রলীগ কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের একাংশের নেতা মো. তুহিন ও শাকিলের নেতৃত্বে একটি মিছিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে কচুয়া বিশ্বরোড এলাকায় রাজমহল হোটেলের সামনে আসলে ওই স্থানে আগে থেকে অবস্থান নেওয়ার চাঁদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের অপর গ্রুপ শেখ সজীব গ্রুপের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়।
জানা যায়, চাঁদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগ দুটি গ্রুপে বিভক্ত। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন তুহিন ও শাকিল। তারা স্থানীয় এমপি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপির অনুসারী। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন শেখ সজীব ও নুর মোহাম্মদ। তাঁরা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদের অনুসারী।
চাঁদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের নতুন কমিটিকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (কচুয়া সার্কেল) মো. আবুল কালাম চৌধুরী ও কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোতাছেম বিল্যাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
সংঘর্ষে আহত ছাত্রলীগ নেতা তুহিন দাবি করেন, আমাদের মিছিলটি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব আলমের অফিসের সামনে আসলে ভাইস চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে মিছিলের ওপর হামলা করা হয়।
ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতা শেখ সজীব ও নুর মোহাম্মদ দাবি করেন, কথিত ছাত্রলীগের একটি মিছিল থেকে কচুয়ার সিনিয়র নেতাদের নামে উচ্ছৃঙ্খল বক্তব্য দেয় এবং ঘটনাস্থলে অবস্থান নেওয়া তাঁদের কর্মীদের ওপর হামলা করে।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকর্মীদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করি। তাদের থামানোর সময় আমিও হাতে আঘাত পাই।’
কচুয়া থানার ওসি মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘চাঁদপুর পলিটেকনিক ছাত্রলীগের কমিটি সংক্রান্ত বিষয়ে ছাত্রলীগের দু’প্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রাপ্তিসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সংঘর্ষের পর থেকে কচুয়া বিশ্বরোড এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।