নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দেশের প্রকৃত জনসংখ্যা কত, তা জানতে আজ বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২’ কার্যক্রম। ‘রাত ১২টা’-কে ‘জিরো আওয়ার’ বা ‘শুমারি রেফারেন্স পয়েন্ট’ হিসেবে ধরে এ শুমারি চলবে ২১ জুন পর্যন্ত। এবার দেশে প্রথমবারের মতো ডিজিটাল পদ্ধতিতে শুমারি পরিচালিত হচ্ছে। জনশুমারির এবারের প্রতিপাদ্য ‘জনশুমারিতে তথ্য দিন, পরিকল্পিত উন্নয়নে অংশ নিন।’ মূলত আগামী ১০ বছর দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনায় কীভাবে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়–এ জন্যই ধারাবাহিকভাবে জনশুমারি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
জনশুমারি উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে কার্যক্রমের প্রস্তুতি এবং এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক তাজুল ইলসাম, প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, করোনার কারণে দুই দফায় প্রায় এক বছর পিছিয়েছে জনশুমারির কার্যক্রম। অবশেষে আজ শুরু হচ্ছে শুমারির মূল জরিপকাজ। এবারই প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রায় ৪ লাখ ট্যাব ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এ জন্য দেশজুড়ে ৪ লাখ ৩৪ হাজার কর্মীকে প্রস্তুত করেছে বিবিএস।
এবারের শুমারি ডিজিটাল পদ্ধতিতে হওয়ার কারণে তথ্য সংগ্রহের তিন মাসের মধ্যেই এর প্রাথমিক ফল বা তথ্য প্রকাশের আশা করছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তাঁরা বলেন, এবারের শুমারিতে ব্যক্তির ৪৫ ধরনের তথ্য নেওয়া হবে। আর এসব তথ্য সম্পূর্ণ গোপন রাখা হবে। বিবিএস ছাড়া অন্য কোনো সংস্থার এ তথ্যে প্রবেশাধিকার থাকবে না। তথ্য যাতে হ্যাক না হয়, তার জন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া তথ্য কোনো কারণে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থেকে দুটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ব্যাকআপ রাখা হবে। তা ছাড়া, শুমারি চলাকালে ট্যাব হারিয়ে যাওয়া, নষ্ট হওয়ার কারণে যাতে তথ্য সংগ্রহ বাধাগ্রস্ত না হয়, সে জন্য বাড়তি ট্যাবের সংস্থান রাখা হয়েছে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, যেকোনো পরিকল্পনা গ্রহণ ও যেকোনো অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের জন্য জনসংখ্যার মূল হিসাব গুরুত্বপূর্ণ। তাই প্রত্যেক ব্যক্তিকে গণনায় আনা হবে। সবার উচিত এতে অংশ নেওয়া।
সাত দিনের এই শুমারিতে কেউ বাদ পড়লে তাঁরা যোগাযোগ করে গণনায় যুক্ত হতে পারবেন বলে জানান দিলদার হোসেন। তাজুল ইসলাম বলেন, ‘সবার উচিত শুমারিতে অংশ নেওয়া। অনেক সময় প্রবাসীদেরও এ তথ্য কাজে আসে। এ দেশের কোনো নাগরিকের অন্য কোনো দেশে অবস্থান বা নাগরিকত্বের ক্ষেত্রেও এ দেশে শুমারিতে নাম আছে কি না, তা আমাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়।’