Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

সন্তানের পড়ার খরচ জোগাতে মায়ের হাতে কোদাল-ঝুড়ি

আশরাফুল আলম আপন, বদরগঞ্জ

সন্তানের পড়ার খরচ জোগাতে মায়ের হাতে কোদাল-ঝুড়ি

বদরগঞ্জের নয়াপাড়া গ্রামের গৃহবধূ ছুম্মা খাতুনের স্বামী আবু হানিফ দীর্ঘদিন ধরে পক্ষাঘাত রোগে ভুগছেন। বসতবাড়ি ছাড়া আর কোনো জমি নেই তাঁদের। হানিফ কর্মহীন হয়ে পড়ায় সংসারের হাল এখন স্ত্রী ছুম্মার কাঁধে।

দরিদ্র এই দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে। সংসার চলাতে হিমশিম খাওয়ায় অল্পে বয়সে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। দুই ছেলের একজন কলেজে এবং অন্যজন পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে মা ছুম্মা ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ নিয়েছেন। তিনি দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরিতে কাজ করছেন।

ছুম্মা বলেন, ‘স্বামী পঙ্গু হয়া বাড়িত পড়ি আছে। ছইল দুইটার নেকাপড়ার খুব ঝোঁক। স্বামী কর্ম করিতে না পারায় ওমার নেকাপড়া বন্ধর পথে। তাই ওদের নেকাপড়ার খরচ জোগাইতে রাস্তাত মাটি কাটার কাজ নিচো।’

বদরগঞ্জে চলমান ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচি ছুম্মার মতো অনেক নারীশ্রমিক কাজ করছেন। তাঁদের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক। তাঁদের অনেকে সন্তানের পড়ার খরচ জোগাতে হাতে তোলে নিয়েছেন কোদাল ও ঝুড়ি।

বালাপাড়া গ্রামের হোসনে আরা বেগম বলেন, ‘দিনমজুর স্বামীর টাকায় চলছে না সংসার। টাকার অভাবে দুই সন্তানের লেখাপড়া বন্ধের পথে। এই অবস্থায় শরম ফেলে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে ৪০ দিনের মাটি কাটার কাজ নিচি। কিছুদিন আগোত ৪০ দিন কাজ করি ১৬ হাজার টাকা পাইছি। আবার কাজ শুরু হইচে। ৪০ দিন কাজ শেষে হইলে আবারও পাবো ১৬ হাজার টাকা। এতে দুই সন্তানের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে আপাতত কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’

খোরাজান গ্রামের গৃহবধূ শাহিদা বেগম জানান, অন্যের বাড়িতে কাজ করলে নারীশ্রমিক বলে মজুরি কম দেওয়া হয়। কিন্তু কর্মসৃজনে কাজ করলে সমান মজুরি পাওয়া যায়। এই মজুরির টাকায় তাঁর এক ছেলে অনার্সে লেখাপড়া করছেন।

রাধানগর মাদ্রাসাপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবুও সংসার চলাতে ভ্যানের হ্যান্ডেল ধরতে হয়েছে তাঁকে। তাঁর স্ত্রী নাজমা বেগম দুই সন্তানের লেখাপড়ার জন্য কাজ নিয়েছেন কর্মসৃজনে। নাজমা বলেন, ‘স্বামী শারীরিক প্রতিবন্ধী। ভ্যান চলার টাকায় নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা হয়েছে। সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে মাটি কাটার কাজ করছি।’

এসব শ্রমিকেরা বৃহস্পতি ও শুক্রবার বাদে অন্য দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মাটি কাটার কাজ করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় সব নারীরাই সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে কর্মসৃজনে কাজ নিয়েছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বাবুল চন্দ্র রায় বলেন, ‘কর্মসৃজন প্রকল্প ঘুরে অনেক নারীশ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তাঁরা কমবেশি সবাই সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতেই মাটি কাটার কাজ করছেন।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ বলেন, ‘কর্মসৃজন প্রকল্পে নারীরা কাজ করে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগাচ্ছেন, এটা অত্যন্ত ভালো দিক। তাঁদের দেখে অন্য নারীরাও কাজ করতে উৎসাহিত হবেন।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ