নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের আর্টিফিশিয়াল টার্ফ নিয়ে যখন তুমুল বিতর্ক, এ সময় বাফুফের গ্রাউন্ডস কমিটির সাবেক প্রধান বলছেন, কমলাপুরের টার্ফ গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে এটি স্থাপনের শুরুর বছর থেকেই।
২০১৫ সালে ফিফার নিজস্ব তত্ত্বাবধানেই কমলাপুরে বসে আর্টিফিশিয়াল টার্ফ। টার্ফ স্থাপনের ঠিকাদারি দায়িত্ব দেওয়া হয় ভারতের হায়দরাবাদের একটি প্রতিষ্ঠানকে। টার্ফ বসানোর শুরু থেকেই অনিয়ম হয়েছে বলে আজকের পত্রিকাকে জানালেন বাফুফের তৎকালীন গ্রাউন্ডস কমিটির সাবেক প্রধান ফজলুর রহমান বাবু, ‘টার্ফ স্থাপনে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে, এমন একাধিক অভিযোগ শুনতে পেয়ে আমি নিজেই সরেজমিনে এসে অনিয়মের কথা বাফুফেকে জানাই। তখন কমলাপুরের কিউরেটর আমাকে বলেছিলেন, টার্ফের পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো নয়। স্থানীয়ভাবে ব্যবহৃত পাথরও নিম্নমানের।’
টার্ফের ত্রুটির কথা বাফুফের মাধ্যমে অবহিত হওয়ার পর পরিদর্শক দল পাঠিয়েছিল ফিফা। নিম্নমানের রাবারে তৈরি হওয়া এই টার্ফ খেলোয়াড়দের বড় রকমের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলতে পারে, এমন হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল ফিফা। ফজলুর রহমান জানালেন, ‘ফিফাও বলেছিল এই টার্ফ খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। এই টার্ফে খেললে খেলোয়াড়দের ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি দেখা দিতে পারে। এই মাঠ প্রথম বছরেই অকেজো হয়ে গেছে।’
শুরু থেকেই ত্রুটিতে থাকা দামি এই টার্ফ থেকে দুই ট্রাক পাথর অপসারণ করে একপ্রকার জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানোর মতো অবস্থায় আনা হয়েছিল। কিন্তু শুরুতে টার্ফে যে পরিমাণ কালো রাবারের দানা বা ইনফিল থাকার কথা ছিল, তা বলতে গেলে ছিল না বলেই জানালেন ফজলু। ইনফিল না থাকায় টার্ফ দেবে যায়, খেলোয়াড়দের পায়ের মাংসপেশিতে বাড়তি টান পড়ে। টার্ফ পরিষ্কার এবং অবাঞ্ছিত বস্তু অপসারণের জন্য একটি বিশেষ যন্ত্র ফিফার পক্ষ থেকে দেওয়া হলেও সেটিও এখন বিকল হয়ে আছে বলে জানালেন ফুটবলের এই অভিজ্ঞ সংগঠক।
স্থাপনের প্রথম দুই-তিন বছর মোটামুটি কাজ চালানো গেলেও দিনে গড়ে তিন থেকে চার ম্যাচ খেলিয়ে টার্ফের কার্যকারিতা নষ্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ ফজলুর রহমানের। মাঠে আছে ছোট ছোট গর্ত। শীর্ষ পর্যায়ের ফুটবলাররা সাধারণত যে ধরনের বুট পরে খেলেন, সেসব বুটের স্পাইক এসব গর্তে আটকে হোঁচট খাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এক মাঠকে ঘিরে ফুটবল অথবা ভালো মাঠে খেলা না হলে দেশের ফুটবলের উন্নয়ন হবে না বলে মন্তব্য সাবেক এ গ্রাউন্ডস কমিটি প্রধানের, ‘টার্ফকে নতুন করে সাজাতে হবে, মাঠের সংখ্যা বাড়াতে হবে। না হলে দেশের ফুটবল এগোবে না।’