পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার লঞ্চঘাটটি জেলা প্রশাসন ইজারা দেয়। তবে ৯ মাসেও ইজারাদার দায়িত্ব বুঝে পাননি। এদিকে ঘাটটি অন্য একজনকে ইজারা দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
বিআইডব্লিউটিএ বলছে, তারা সরকারি বিধি মোতাবেক ঘাট ইজারা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন কীভাবে ঘাটের ইজারা দিয়েছিল, সেটি তাদের দেখার বিষয় নয়।
জানা যায়, গত বছর রাঙ্গাবালী উপজেলার ফেলাবুনিয়া পন্টুনবিহীন লঞ্চঘাটটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ইজারা আহ্বান করা হয়। সদর উপজেলার নন্দিপাড়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে গত বছরের ২১ মার্চ লঞ্চঘাট বন্দোবস্ত কমিটির সভায় গৃহীত হয়। পরে ২৫ মার্চ এক বছরের জন্য ইজারার টাকা জমা দেন সিদ্দিকুর। কিন্তু ঘাটে গিয়ে তিনি দেখতে পান বিআইডব্লিউটিএ ঘাটের নাম পরিবর্তন করে (বড় বাইশদিয়া লঞ্চঘাট) একটি পন্টুন স্থাপন করে অন্যজনকে ইজারা দিয়েছে। তাদের নিয়োজিত ইজারাদারই ওই ঘাটে যাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছেন।
সিদ্দিকুর পটুয়াখালী সরকারি কলেজের স্নাতক (সম্মান) চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি রোজগারের জন্য তিনি ঘাটটি ইজারা নেন। সিদ্দিকুর বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আমি ঘাট ইজারা পাই। কিন্তু গিয়ে দেখি বিআইডব্লিউটিএ ঘাটের নাম পরিবর্তন করে পন্টুন দিয়ে ইজারা দিয়েছে। তখন আমি এডিসি (রাজস্ব) স্যারের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানাই। তিনি রাঙ্গাবালীর ইউএনও স্যারকে ঘাট বুঝিয়ে দিতে বলেন। একপর্যায়ে ইউএনও স্যার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে সরেজমিন তদন্ত করতে বলেন। সাইফুল গত ৩১ অক্টোবর বিআইডব্লিউটিএর বড় বাইশদিয়া নামে কোনো লঞ্চ ঘাটের অস্তিত্ব নেই মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ঘাট ইজারা নিয়েও বুঝে পেলাম না। আমার টাকাও ফেরত পেলাম না। চিঠি চালাচালিতেই চলে গেল ৯ মাস।’
ইউএনও মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘ফেলাবুনিয়া ঘাটের ইজারাদার প্রথমে একবার আমার কাছে এসেছিলেন। তখন আমি বলেছি, ওদের কাগজপত্র নিয়ে আমার কাছে আসেন। কিন্তু তিনি পরে আর আসেননি। আমি বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছি। তদন্ত রিপোর্ট আমার কাছে দিয়েছে কি না, আমার খেয়াল নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’
এ বিষয়ে এডিসি (রাজস্ব) মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘ঘাটটি বুঝিয়ে কেন দেওয়া হয়নি, এ জন্য রাঙ্গাবালী ইউএনওকে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যেহেতু সে দেয়নি, তাকে আবারও চিঠি দেওয়া হবে। প্রতিবেদন দিলে দেখে ব্যবস্থা নিব।’
এদিকে জানতে চাইলে পটুয়াখালী বিআইডব্লিউটিএর সহকারী পরিচালক ও নদী বন্দর কর্মকর্তা মহিউদ্দিন খান বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএ সরকারি বিধি মোতাবেক ঘাট ইজারা দিয়েছে। দেড় লাখ টাকা ইজারামূল্যে এটি ইজারা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন কীভাবে ইজারা দিয়েছিল, সেটি আমার দেখার বিষয় নয়।’