চলতি বছরের ২৭ মে সয়াবিন তেলের দাম এক লাফে লিটারে ৯ টাকা বাড়ানো হয়। এরপর গত অক্টোবরে প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম আবারও ৭ টাকা করে বাড়ে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের দাম বাড়ায় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে তেলের এই দাম ঠিক করে। সয়াবিনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে সরিষা ও পাম তেলের দামও। বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ার কারণে দিনাজপুরের বিরামপুর এবার বেড়েছে সরিষার চাষ।
গত বছর ১০৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছিল। এ বছর সরিষার চাষ হয়েছে ১০৮০ হেক্টর জমিতে।
গতকাল বুধবার, বেগমপুর ঘুরে দেখা যায়, আমন ধান কাটা এবং মাড়াইয়ের পর ওই জমিতে সার দিয়ে মাটি তৈরি করে সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকেরা।
সরিষার গাছে এরই মধ্যে ফুল ধরেছে। তাই চারদিকে এখন যেন হলুদের সমারোহ। প্রকৃতিতে ফুলের সুবাস ছড়াচ্ছে সরিষার ফুল। এসব সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহে এ গাছ থেকে সেগাছে ওড়ে বেড়াচ্ছে মৌমাছি।
সম্প্রতি বাজারে ডিজেলের দামও বেড়েছে। এই কারণে অনেক কৃষক জমিতে সেচনির্ভর চাষাবাদের বদলে সরিষার চাষ করেছেন। কারণ সরিষার চাষে পানি সেচের প্রয়োজন হয় না। এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে কৃষকের খচর হয় দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রকারভেদে সরিষা উৎপন্ন হয় ৫ থেকে ৬ মণ পর্যন্ত।
বেগমপুর গ্রামের সরিষা চাষি সুনিরাম বলেন, ‘দেশে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েই চলেছে। তাই আমি সরিষার আবাদ করেছি। অন্যান্য বছর ২৫ শতক জমিতে সরিষার চাষ করতাম। কিন্তু এবার আরও ৪০ শতক জমিতে সরিষার চাষ করেছি।’
কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ প্রতিবছর আমি জমিতে সরিষা চাষ করে আসছি। এ বছর এক বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বড় একটি অংশ বাজারে বিক্রি করতে পারব। তাতে ভালো দাম পাওয়া যাবে বলে আশা করি।
বিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার নিকসন চন্দ্র পাল বলেন, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ১০৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করেছে কৃষকেরা। তবে গত বছর এই উপজেলায় সরিষার চাষ আগের চেয়ে বেশি হচ্ছে। আমরা কৃষকদের বিনা মূল্যে সরিষার বীজ ও সার দিয়েছি।