টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলায় এবার সরিষার আবাদ ভালো হলেও ঝোড়ো হাওয়ায় গাছ নুয়ে গেছে। আবার পাকা সরিষা বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। একই সঙ্গে পেঁয়াজ, রসুন, আলু, ভুট্টাসহ অন্য ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছেন, অসময়ের এ বৃষ্টিতে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের সরিষা ও শীতকালীন সবজি, পেঁয়াজ, রসুন ও আলুর জমিতে পানি জমেছে এবং ফসল মাটিতে হেলে পড়েছে। এতে কৃষকেরা লোকসানের আশঙ্কা করছেন। তা ছাড়াও জমিতে তুলে রাখা পাকা সরিষা বৃষ্টিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আবার কোনো কোনো জমির সরিষার দানা ঝরে পড়েছে। সব মিলে অসময়ের বৃষ্টিতে কৃষকেরা ব্যাপকভাবে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় ৫ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। গত বছর সরিষার চাষ হয়েছিল ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর। এ বছর সরিষা ২৩০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। এ অঞ্চলে সাধারণত টরি-৭, বারি-১৪, ১৫, ১৭, ১৮ ও বিনা-৪ ও ৯ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে টরি-৭ জাতের সরিষা বেশি মাত্রায় চাষ হয়েছে। এবার সরিষার ফলন অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক ভালো ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে সরিষাসহ আলু, ভুট্টা, পেঁয়াজ, রসুন, গম, ক্ষীরা, মসুর ও খেসারি ডালের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বেশি হওয়ায় তাঁরা তেলের চাহিদা পূরণের জন্য এ বছর বেশি করে সরিষা আবাদ করেছেন। কিন্তু দুই দিনের বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ায় তাঁদের স্বপ্ন ভঙ্গ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের লালুয়ামাঝিড়া গ্রামের সরিষাচাষি জুয়েল রানা বলেন, এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত এক বিঘা জমির সরিষা ওঠানো হয়েছে। সরিষার ফলনও ভালো হয়েছে। বাকি চার বিঘা জমির সরিষা জমিতে রয়ে গেছে। কিন্তু দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে সরিষাগাছ হেলে পড়েছে। অসময়ে বৃষ্টিতে সরিষার দানা ঝরে যাচ্ছে। এতে ফলন কম হবে। আর ফলন কম হলে লোকসান গুনতে হবে।
আরেক কৃষক হাচেন আলী বলেন, ‘আমার এক বিঘা জমির সরিষা নিয়ে চিন্তায় আছি। প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। সরিষাগাছ জমিতে হেলে পড়ে গেছে।’
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার সরিষাসহ অন্যান্য রবিশস্যের আবাদ ভালো হয়েছে। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টিতে রবি ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।