কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে এবার ঘোস্ট প্রজাতির জেলিফিশের উপস্থিতি শনাক্ত করেছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) বিজ্ঞানীরা। হালকা বিষধর প্রজাতির এই জেলিফিশের রয়েছে মূল্যবান ঔষধি গুণ। এক সপ্তাহ ধরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কয়েকটি স্থানে নতুন শনাক্ত এই প্রজাতির জেলিফিশ ভেসে আসে। তবে এ প্রজাতির জেলিফিশ প্রাণঘাতী নয় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বোরির বিজ্ঞানীরা কক্সবাজার শহরের অদূরে পেঁচারদ্বীপ উপকূলে জেলেদের জালে আটকে পড়া দুটি জেলিফিশ উদ্ধার করেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেগুলো ঘোস্ট জেলিফিশ বা সায়ানিয়া নোজাকি প্রজাতির হালকা বিষধর জেলিফিশ হিসেবে শনাক্ত করেন। এই প্রজাতির জেলিফিশ প্রায়ই জেলেদের জালে কিংবা সমুদ্রতীরে আটকা পড়ে। স্থানীয়দের কাছে এটি ‘গরু নুইন্না’ ও ‘হাতি নুইন্না’ নামেও পরিচিত।
বোরির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌমিত্র চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো ঘোস্ট প্রজাতির জেলিফিশ চিহ্নিত হয়েছে। এ নিয়ে গবেষণা চলছে।
সৌমিত্র চৌধুরী আরও বলেন, জেলিফিশটি হালকা বিষধর। তবে শরীরে রয়েছে মূল্যবান ঔষধি গুণ। এই প্রজাতির জেলিফিশ থেকে কোলাজেন পেপটাইড তৈরি করা হয়, যা ওষুধ ও ত্বকের প্রসাধনীতে তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
এর আগে গত দুই বছরে কয়েক দফায় কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপকভাবে হোয়াইট টাইপ জেলিফিশ বা সাদা নুইন্না জেলেদের জালে ও তীরে আটকা পড়ে। এই জেলিফিশ খাওয়ার উপযোগী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই জেলিফিশ আন্তর্জাতিক বাজারে ১০ ডলার বা ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এটি ওষুধ ও প্রসাধনশিল্পে ব্যবহার উপযোগী বলে বোরির বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন।
বোরির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশিদ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জেলিফিশ থেকে সার, কীটনাশক, ওষুধ, কসমেটিকসসহ নানা পণ্য তৈরি হচ্ছে। খাদ্য হিসেবে জেলিফিশ জনপ্রিয়। এশিয়ার কিছু অঞ্চলেও ওষুধশিল্পে ব্যবহার হচ্ছে। বাংলাদেশও জেলিফিশ রপ্তানি করে প্রতিবছর শত শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে। এতে সুনীল অর্থনীতির নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। এ লক্ষ্যে বোরির বিজ্ঞানীরা জেলিফিশ নিয়ে গবেষণা করছেন বলে জানান তিনি।