হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা সীমান্তে ডাকাতিয়া নদীতে সেতু নির্মাণে ব্যয় ৬০ কোটি টাকা বৃদ্ধির পরও কাজ শুরু করেননি ঠিকাদার। ১৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দেও কাজ শুরু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন দুই পাড়ের মানুষ। হাজীগঞ্জের অলিপুর ও ফরিদগঞ্জের ভাজপাড়ের মধ্যবর্তী উটতলী এলাকার খেয়াঘাটে সাড়ে ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ হওয়া কথা। এখন ওই স্থানে নৌকায় পারাপার হচ্ছে হাজারো মানুষ।
জানা গেছে, দুই উপজেলাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে ২০২০ সালের জুলাইয়ে একনেক সভায় উটতলী খেয়াঘাটে সাড়ে ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণের জন্য ১০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন হয়। ওই বছর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে কাজ পায় ঢাকার দোহার উপজেলার মো. আইয়ুব আলীর মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুরমা এন্টারপ্রাইজ। প্রকল্প অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কাজ শেষ করা কথা। কিন্তু গত দুই বছরে কাজ আরম্ভ না করেও ২০২২ সালের শুরুতে মালামালের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে আরও ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেই সঙ্গে এক বছর সময়ও বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে এখনো কাজ শুরু করেননি ঠিকাদার।
উটতলী এলাকায় দেখা যায়, খেয়াঘাটে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পারাপার হচ্ছে দুই পাড়ের মানুষ। প্রতিবার পার হওয়ার জন্য ইজারাদারকে ৫ টাকা ও নৌকার মাঝিকে ৫ টাকা করে দিতে হয়। এতে দুই উপজেলার সাধারণ মানুষকে ব্যবসা-বাণিজ্য, বাজারে যাতায়াতের সময় পারের টাকা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিশেষ করে হাজীগঞ্জের অলিপুর গ্রামের শিক্ষার্থীদের মুন্সীরহাটে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার সময় বিড়ম্বনায় পড়ে। শিক্ষার্থী আলমগীর, সবুজ, লায়লা আক্তার, অলিপুর গ্রামের বাসিন্দা মোস্তফা, নূরজাহান, এরিনা রানীসহ একাধিক ব্যক্তি এ কথা বলেন।
সেতুটি নির্মাণ হলে পার্শ্ববর্তী উভারামপুর, বদরপুর, মুন্সীরহাট এলাকার নদীর তীরবর্তী মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
উটতলী খেয়াঘাটের ইজারাদার তাফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘একসময় এই ঘাট দিয়ে দৈনিক কয়েক হাজার লোক পারাপার করত। তখন ১ টাকা করে নিলেও অনেক টাকা হতো। এ বছর ২ লাখ টাকার ইজারা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। শুনেছি সেতু নির্মাণের টেন্ডার হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজ ধরার কোনো লক্ষণ দেখছি না।’
সুরমা এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার কাইউম হোসেন বলেন, ‘নানা কারণে ১০৭ কোটি টাকার বাজেট আরও ৬০ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ বছরের মধ্যে কাজ শুরু হবে।’
হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী রেজায়ানুল ইসলাম বলেন, ‘সুরমা এন্টারপ্রাইজ নানা জটিলতা দেখিয়ে ডাকাতিয়া নদীর ওপর আরও একটি সেতুর চলমান কাজ বন্ধ রেখেছে। উটতলী সেতু নির্মাণে তদারকির দায়িত্বে রয়েছে ফরিদগঞ্জ অফিস। তার পরও কাজের গতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেব।’