হোম > ছাপা সংস্করণ

চিনিতে রঙ দিয়ে আখের গুড়

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর পাংশায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিনিতে রং, সোডা, ফিটকিরিসহ বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করছেন আখের গুড়। এসব ভেজাল গুড় খেলে ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগ হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

এসব গুড় বাজারজাত করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। দীর্ঘদিন ধরে অসাধু ব্যবসায়ীরা ভেজাল গুড় তৈরি করে এলেও প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই। এ অবস্থায় উপজেলায় এসব গুড়ের কারখানা বন্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গিপাড়া ও রঘুনাথপুর গ্রামে নামবিহীন দুটি কারখানায় দেখা যায়, স্যাঁতসেঁতে মেঝে ও নোংরা পরিবেশে পচা গুড় একটি চৌবাচ্চার মধ্যে ঢালা হয়েছে। ঢেলে রাখা গুড়ের চৌবাচ্চায় শ্রমিকেরা ঘামযুক্ত শরীরে দুই পায়ের সাহায্যে রং, চিনি, কেমিক্যাল মেশানোর কাজ করছেন। মাঝে মাঝে শ্রমিকেরা হাঁচি ও কাশিও দিচ্ছেন আর সেসব চৌবাচ্চার গুড়ে গিয়ে পড়ছে।

রং, চিনি, কেমিক্যাল মেশানো গুড় তাপ দেওয়ার জন্য কড়াইয়ে চুলার ওপরে দেওয়া হচ্ছে। কিছুক্ষণ তাপ দেওয়ার পর যখন কালো বর্ণ ধারণ করছে তখন মিশ্রণে দেওয়া হচ্ছে হাইড্রোজ ও ফিটকিরি। এভাবে প্রায় ৩০ মিনিট চুলায় তাপ দেওয়ার পর কিছুটা লালচে রং ধারণ করে মিশ্রণটি। পরে ওই ভেজাল গুড় ঢালা হয় নির্দিষ্ট পাত্রে। এরপর তা পাঠানো হয় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

রঘুনাথপুর গ্রামের ভেজাল গুড় কারখানার মালিক রাজকুমার জানান, তাঁরা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গুড় তৈরি করেন। কারখানায় যাঁরা শ্রমিক রয়েছেন তাঁরাও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়েই কাজ করেন। তাঁদের তৈরি গুড়কে দোজালি গুড় বলা হয়। এই গুড় তৈরিতে তাঁরা চিনি আর ফুড কালার ব্যবহার করেন। যেটা স্বাস্থ্যসম্মত বলে দাবি তাঁর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ‘প্রতিদিন দুই কারখানা থেকে তৈরি করা হয় প্রায় ১০০ মণ গুড়। এসব গুড়ে রং, হাইড্রোজ, ফিটকিরি, সোডাসহ বিভিন্ন রকমের কেমিক্যাল মেশানো হয়। জেনেশুনে এমন গুড় তো নিজেরা খেতে পারি না।’

কারখানা এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘ভেজাল গুড়ের কারখানার কারণে আমাদের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। পচা গুড়ের গন্ধে ঘরে থাকা যায় না। মশা-মাছির উপদ্রব বেড়েছে। এ ছাড়া গুড়ের কারখানার কালো ধোঁয়ায় গাছপালা মরে যাচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, ভেজাল গুড়ের কারখানা বন্ধ করা হোক।’

সৌরভ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘চিনিতে পানি ও রং দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভেজাল গুড়। সেই গুড়ের ওপর ইঁদুর, টিকটিকি, তেলাপোকা মরে থাকে। এই গুড় মানুষ খেলে বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত হবে।’

প্রশাসনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে প্রশাসনের কয়েকজন এসেছিলেন। কিছু সময় কারখানায় থেকে চলে গেছেন। তারপর কী হয় জানি না।’

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইব্রাহিম টিটোন বলেন, ‘রং, কেমিক্যাল মেশানো খাবার খেলে ক্যানসার, লিভারে সমস্যা, কিডনিতে সমস্যা, চামড়ায় সমস্যাসহ নানা ধরনের রোগব্যাধি হতে পারে। এসব খাবার খাওয়ার আগে সবাইকে সচেতন হতে হবে।’

পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ আলী বলেন, ‘গত বছর আমরা বাহাদুরপুরে এ রকম ভেজাল গুড়ের কারখানার সন্ধান পেয়েছিলাম। জানার সঙ্গে সঙ্গে সে কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। সেই কারখানা পুনরায় চালু করা হয়েছে নাকি নতুন কোনো কারখানা হয়েছে সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। যদি কেউ ভেজাল গুড় তৈরি ও বাজারজাত করেন অবশ্যই আমরা তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন