বিএনপির ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিলের আগে দলটির মধ্যম সারির নেতা, যুবদল ও ছাত্রদলের সংগঠকদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তৈরি করা একটি তালিকা ধরে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হতে পারে। পুলিশ তাঁদের আক্রমণাত্মক ও ধ্বংসাত্মক নেতা হিসেবে উল্লেখ করেছে। এক নারীনেত্রীসহ ৮৯ জনের এই তালিকায় ঢাকা মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, সাভার ও কেরানীগঞ্জের বিএনপির নেতা-কর্মীরা রয়েছেন। যেসব নেতা বিএনপির কর্মসূচিতে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আসেন, তাঁদেরই টার্গেট করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত সোমবার রাতে ঢাকার কলাবাগান থেকে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ডিএমপি রমনা বিভাগের নিউমার্কেট জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার শরীফ মো. ফারুকুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে জানান, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা ছিল, আদালতের পরোয়ানার ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপির এমন মধ্যম সারির আরও নেতাকে গ্রেপ্তারে মাঠে রয়েছে ডিএমপির গোয়েন্দা ও থানা-পুলিশ। তালিকার প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই নাশকতা ও ভাঙচুরের মামলা রয়েছে। ডিবির তৈরি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব নেতা বাইরে থাকলে ধ্বংসাত্মক কাজে অংশ নিতে পারেন। এতে দেশের আইনশৃঙ্খলা অবনতি হতে পারে। তাঁরা যেকোনো নাশকতা করতে পারেন।
এই তালিকার উল্লেখযোগ্য নেতারা হলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম রেজা হাবিব, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, ঢাকা জেলা বিএনপি সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সাইফ মাহমুদ জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াছিন আলী, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি শফিউদ্দিন সেন্টু ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান মোসাব্বির। তাঁদের ৩০ ডিসেম্বরের আগে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের আগে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। পুলিশের তথ্যানুযায়ী ওই অভিযানের প্রথম ১৫ দিনে ২৪ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে ৫ হাজার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা চাই সকল রাজনৈতিক দল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে। তারপরও যদি কেউ নাশকতাসহ বেআইনি কোনো কাজ করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গ্রেপ্তার, আটক, জিজ্ঞাসাবাদ পুলিশের রুটিন ওয়ার্ক দাবি করে তিনি বলেন, তাঁদেরই গ্রেপ্তার করা হয়, যাঁরা অপরাধের সঙ্গে জড়িত, অপরাধ কর্মকাণ্ড করেন এবং অপরাধে ইন্ধন দেন।