বর্ষা শেষ হলেও পানির অভাবে আমন ধানের চারা রোপণ করতে পারেননি নাটোরের বাগাতিপাড়ার কৃষকেরা। এ ছাড়া সার, সেচ ও শ্রমিকের মজুরি বাড়ায় তাঁদের বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭৫ ভাগ জমিতে এখনো আমন হচ্ছে না।
এ বছর পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ। তারা বলছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৫০ ভাগ জমিতে আমনের চারা রোপণ শেষ হয়েছে। আবার প্রতিদিনই সেচ দিয়ে কৃষকেরা ধানের চারা রোপণ করছেন। তবে স্থানীয় কৃষকদের দাবি, পানির অভাবে উপজেলায় ৭৫ ভাগের বেশি জমিতে এখনো আমন ধানের চারা রোপণ করা যায়নি।
এবার বৃষ্টি একেবারে কম হওয়ায় বেশির ভাগ কৃষক তাঁদের জমি প্রস্তুত করতে পারেননি। আর যাঁরা চাষ শুরু করেছেন, তাঁদের নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিতে হচ্ছে।
উপজেলার কালিকাপুর, দেবনগর, রহিমানপুর, জালালপুর, কৈচরপাড়া, জিগরী, তকিনগর, বিলগোপালহাটি এবং ক্ষিদ্রমালঞ্চিসহ আরও কয়েকটি এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্য বছর এই সময়ে প্রায় ৯৫ ভাগ জমিতে চারা রোপণ শেষ হতো। কিন্তু এবার অধিকাংশ জমি পতিত পড়ে আছে। এর কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, মূলত বর্ষা মৌসুমে আমনের আবাদ করা হয়। এ সময় সেচের পেছনে খরচ হয় না তাঁদের। তবে এবার বৃষ্টি একেবারে কম হওয়ায় বেশির ভাগ কৃষক তাঁদের জমি প্রস্তুত করতে পারেননি। আর যাঁরা চাষ শুরু করেছেন, তাঁদের নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া সার ও শ্রমিকের মজুরি বাড়ায় তাঁদের বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে।
কৃষকেরা আরও বলেন, সাধারণত চারার বয়স ২৫ থেকে ৩০ দিন হলে তা জমিতে রোপণ করা হয়। কিন্তু অনেক কৃষকের চারার বয়স দেড় মাস পেরিয়ে গেছে। বৃষ্টি না থাকায় সেগুলো রোপণ করতে পারেননি তাঁরা। ফলে নতুন করে চারা রোপণের সম্ভাবনাও দেখছেন না তাঁরা।
একডালা এলাকার কৃষক হেলাল উদ্দিন বলেন, এই বছর প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষের জন্য তিনি জমি ফেলে রেখেছেন। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে মাত্র তিন বিঘা জমিতে চারা রোপণ করেছেন। এ ছাড়া তেল ও সারের দাম বাড়ায় অন্য খেতগুলো চাষ করতে সাহস পাচ্ছেন না তিনি।
তকিনগর গ্রামের কৃষক হাবিল উদ্দিন বলেন, তাঁদের মাঠে এ রকম ১০০ বিঘার ওপরে জমি পতিত আছে। অতিরিক্ত সেচের খরচ মাথায় নিয়ে কেউ ধান রোপণ করতে চাচ্ছেন না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী বলেন, বর্ষাকাল শেষ হলেও ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত আমন ধানের চারা রোপণ করতে পারবেন কৃষকেরা। ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকেরা আমন ধানের চাষ করবেন বলে আশাবাদী তিনি। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।