কক্সবাজার প্রতিনিধি
উচ্চ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ সামুদ্রিক সবজি হিসেবে বিশ্বে পরিচিত সি-উইড (সামুদ্রিক শৈবাল) পণ্য। এই সি-উইড দিয়ে তৈরি পণ্যের মেলা বসেছে কক্সবাজারে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) উদ্যোগে সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্র এ মেলার আয়োজন করেছে।
দেশে প্রথমবারের মতো গতকাল শনিবার এ মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় সি-উইড দিয়ে তৈরি স্যুপ ও খাদ্য ছাড়াও বিভিন্ন প্রসাধনীসামগ্রী প্রদর্শন করে বিএফআরআই। গতকাল বিকেল ৫টায় এ মেলার উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
এর আগে সমুদ্রসৈকতের একটি অভিজাত হোটেলে সামুদ্রিক শৈবালজাত পণ্য উৎপাদন ও জনপ্রিয়করণ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে এ কর্মশালায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমান সরকার প্রচলিত মৎস্য চাষের পাশাপাশি বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন অপ্রচলিত জলজ সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার ও উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করছে। সামুদ্রিক শৈবাল আমাদের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ও সামুদ্রিক জলজ সম্পদ। এ সম্পদের উন্নয়ন দেশের সুনীল অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।’
কর্মশালায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন মাহমুদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান, কক্সবাজার মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল রহমান ও আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজারস্থ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান বলেন, বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ণ উপকূলে প্রাকৃতিকভাবে সি-উইড জন্ম নেয়। এটি বিশ্বে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জলজ সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। অধিক পুষ্টিমানের দরুন বহুকাল আগে থেকেই সরাসরি সালাদ, মসলা, সবজি ইত্যাদি হিসেবে উন্নত দেশে এর ব্যবহার রয়েছে।
শফিকুর রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশে ২০১৩ সাল থেকেই বিএফআরআইয়ের বিজ্ঞানীরা সি-উইড নিয়ে গবেষণা করছে। ইতিমধ্যে ১৪৩ প্রজাতির সি-উইড শনাক্ত ও সংরক্ষণ করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৩ প্রজাতির সি-উইড বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণসম্পন্ন প্রজাতিগুলোর সঠিক চাষ প্রক্রিয়া নির্ণয়ের জন্যও বিএফআরআইয়ের বিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন।
শফিকুর রহমান জানান, এর মধ্যে ৬ প্রজাতির সি-উইডের চাষ প্রক্রিয়া নির্ণয়ে সাফল্য পেয়েছেন তাঁরা। এ ধারাবাহিকতায় এ বছর সি-উইডজাত খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যও তৈরি করা হয়েছে। এসব পণ্য নিয়েই দিনব্যাপী মেলা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।