বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে উদ্যাপিত হয়েছে খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। সারা দেশে দিনটি উদ্যাপিত হয়েছে বর্ণিল সব আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
বড়দিন উপলক্ষে গতকাল সকাল থেকে প্রার্থনা আর বন্দনা সংগীতে মুখর হয়ে ওঠে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত হলি রোজারি চার্চ। এদিন বর্ণিল সজ্জায় সেজেছিল চার্চটি। উদ্যাপনের পাশাপাশি করোনা মহামারি অবসানের জন্য সেখানে বিশেষ প্রার্থনারও আয়োজন করা হয়।
হলি রোজারি চার্চে প্রার্থনায় অংশ
নিতে আসা আলপনা গোমেজ জানালেন, প্রতিবছর আনন্দের সঙ্গেই বড়দিন পালন করেন তিনি। আর এ জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন প্রায় ৯ দিন আগে, যাকে বলা হয় ‘নভেনাকাল’। এ বছর চার্চে এসে প্রার্থনা করতে পেরে উচ্ছ্বসিত ছিলেন আলপনা। কারণ, করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর এই সুযোগ ছিল না।
চার্চের পাশেই দেখা গেল সমাধিস্থল। সেখানে আত্মীয়দের সমাধিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে ও ফুল দিয়ে তাঁদের স্মরণ করেছেন স্বজনেরা। মায়ের সমাধির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে নীরবে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করছিলেন রাহুল। কথা প্রসঙ্গে বললেন, ‘বড় দিনের এই খুশির মুহূর্তে মাকে অনেক বেশি মিস করি। এখানে এলে মন শান্ত হয়ে যায়, আমার মা ও যিশুর সান্নিধ্যও পাই।’
এদিন সকাল থেকেই দলে দলে নানা মানুষ আসতে থাকেন কাকরাইল গির্জায়। প্রার্থনা শেষে সেখানে নানা আয়োজনের অংশ নেন তাঁরা। রন্টি গোমেজ নামে একজন বললেন, এই দিনেই যিশুর জন্ম। তাই তাঁকে স্মরণ করে বিশেষভাবে প্রার্থনা করি আমরা, আমাদের ভুলগুলোর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর পবিত্র জীবনের কামনা করি।
বড়দিনের আয়োজন নিয়ে নটর ডেম কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা নিউটন মন্ডল জানান, বড়দিনের চার সপ্তাহ আগে থেকেই আয়োজন শুরু হয়। এই সময়টাকে বলা হয় ‘আগমনকাল’। এ সময়ে যিশুকে বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়। প্রতি রোববার প্রার্থনা করা হয়। আইনশৃঙ্খলার ব্যাপারে জানতে চাইলে নিউটন বলেন, আমার মনে হয় শৃঙ্খলাবিষয়ক প্রস্তুতি অনেক ভালো। আশা করি কোনো বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে না।
নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, ‘আমরা বাড়তি সতর্কতা নিয়েছি। অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার তথ্য আমরা পাইনি। তাই এমন কিছু ঘটার আশঙ্কা করছি না। তবে আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক।’